দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট পার্ক জিউন হাই দেশটির মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার নতুন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট রহ-মু-হিয়ুন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন সেক্রেটারি কিম বিয়ং জুনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি হুয়াং কিউ-এনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ইম জং ইয়ংকে অর্থমন্ত্রী এবং পার্ক সং জো’কে জননিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পার্ক। খবর আল জাজিরার।
খবরে বলা হয়, বুধবার মন্ত্রিসভার নতুন এই পরিবর্তনের ঘোষণা দেন পার্ক জিউন হাই। এর আগে পার্কের ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু সরকারি কোনো দায়িত্বে না থেকেও পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে তার পরিচালিত ফাউন্ডেশনে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অর্থ অনুদান দিতে বাধ্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে পার্কের ওই বন্ধু চোই সুন-সিলকে আটক করা হয়েছে সোমবার।
পার্কের ঘনিষ্ঠ আন জং-বিয়ম নামের আরও একজনকেও আজ বৃহস্পতিবার আটক করেছে বলে খবর দিয়েছে বিবিসি। পার্ক গত সপ্তাহে স্বীকার করে নিয়েছেন, চোই তার কিছু বক্তব্যকে সম্পাদনা করে দিয়েছেন এবং জনসংযোগেও কিছু সহায়তা করেছেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার গণমাধ্যগুলো বলছে, চোই সম্ভবত সরকারি কাজে এর চেয়েও বেশি ভূমিকা রেখেছেন। এই কেলেঙ্কারির জের ধরে পার্কের পদত্যাগের দাবিও উঠেছে। কিন্তু সেই ধাক্কা সামাল দিতে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছেন পার্ক। এই পদে তিনি বেছে নিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রয়াত উদারপন্থি প্রেসিডেন্ট রোহ মু-হাইউমের শীর্ষ উপদেষ্টা কিম বিয়োং-জুনকে।
আল জাজিরার হ্যারি ফসেট সিউল থেকে জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়াতে অত্যন্ত শক্তিশালী একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিয়ে জাতীয় ঐকমত্যের মন্ত্রিসভা গঠন করার আলোচনা রয়েছে। তাতে করে সরকারকে প্রেসিডেন্টের থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী পদে পার্কের করা নতুন নিয়োগকে সংসদে অনুমোদিত হতে হবে। তবে রক্ষণশীল বলে পরিচিত পার্কের এই উদ্যোগকে উদারপন্থিদের কাছাকাছি যাওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী ও নিরপত্তামন্ত্রীর পদেও পরিবর্তন এনেছেন পার্ক। তাদের জন্য অবশ্য সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন হবে না।
তবে আল জাজিরার প্রতিবেদক জানিয়েছেন, বিরোধী দল সংসদ বর্জন করলে নতুন নিয়োগের সংসদীয় অনুমোদন পাওয়াটা জটিল হয়ে পড়বে।
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী কিম প্রেসিডেন্ট পার্কেরও তদন্তের মুখে পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। সংবাদ সম্মেলনে কিম বলেন, ‘আমার অবস্থান হলো একটি তদন্ত হতেই পারে। তবে যেহেতু তিনি রাষ্ট্রপ্রধান, তাই এই তদন্তের প্রক্রিয়ায় সতর্ক থাকতে হবে।’ পার্ককে তদন্তের মুখে ফেলার দাবি বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যদেরও রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/ ০৩ নভেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম-১৭