ঘটনাটি দু’বছর আগের। সে সময় মসুল এবং পাশের কারাকোশ শহর যখন দখল করে আই এস জঙ্গিরা। তখন সেখান থেকে পালিয়ে কিরকুক শহরে চলে আসে মোনালি আতাল্লা সহ আরও ছয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ছাত্রী। কিন্তু কয়েকশো আই এস জঙ্গি আচমকা আক্রমণ করে বসে ইরাকে তৈল শহর কিরকুকে।
সেনা ও পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষের সময়ে আতাল্লাদের বাড়িটিতে আশ্রয় নেয় কয়েকজন জঙ্গি। যে ঘরে আই এস জঙ্গিরা ঢুকে পড়েছিল, সেই ঘরের খাটের তলায় লুকিয়ে ছিল আতাল্লা সহ বাকিরা। চারিদিকে অন্ধকার থাকায় জঙ্গিরা কেউই ওই মেয়েদের হদিশ পায়নি।
‘মা আমাকে এখন ফোন করো না। আই এস জঙ্গিদের সঙ্গে একঘরে আটকে রয়েছি।’ সে সময় আতাল্লা তার মাকে এই মেসেজটি পাঠিয়েছিল, যাতে কোনও ভাবে ফোনটি না বেজে ওঠে। কারণ একবার ধরা পড়লে জঙ্গিরা প্রাণে মেরে ফেলত তাদের। এখনও সেই রাতের স্মৃতি তাড়া করে বেড়ায় আতাল্লাকে।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে একথা জানিয়েছে আতাল্লা নিজে। সে জানায়, "সেই ঘরে জঙ্গিদের উপস্থিতি আমরা প্রত্যেকটি মুহূর্তে টের পেয়েছিলাম। এমনকী তাদের কথায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। সংঘর্ষে দু’জন জঙ্গি আহত হয়েছিল। খুব নীচু স্বরে তারা নিজেদের মধ্যে কথা বলছিল। আমরা খাটের নিচে লুকিয়ে ছিলাম। চারিদিক অন্ধকার থাকায় আমাদের উপস্থিতি কেউ টের পায়নি। তবে এক সময় তাদের একজনের পা আমার কাঁধে লাগে। সে সময় আমি সত্যিই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।"
কিন্তু তারা কীভাবে ওই অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে আতাল্লা জানায়, "অনেকক্ষণ পর জঙ্গিরা চলে যায়। পরদিন সকালে কিরকুকের বিশেষ পুলিস বাহিনী তাদের উদ্ধার করে।"
বিডি-প্রতিদিন/৪ নভেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-১৯