আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) প্রাক্তন কর্মকর্তা জন নিক্সন বলেছেন, সাদ্দাম হোসেন ইরাকের উপযুক্ত শাসক ছিলেন। ফাঁসি না দিয়ে তার হাতে ইরাকের শাসন ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া উচিত ছিল।
২০০৩ সালে ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনকে জেরা করেছিলেন তিনি। সেই ঘটনা নিয়ে সম্প্রতি ‘ডিব্রিফিং দ্য প্রেসিডেন্ট: দ্য ইন্টারোগেশন অফ সাদ্দাম হোসেন’ নামের একটি বই লিখেছেন নিক্সন। তাতেই এমন মন্তব্য করেছেন।খবর আজকালের।
তিনি বলেছেন, সাদ্দাম হোসেনকে একেবারেই পছন্দ করি না। কিন্তু দীর্ঘদিন যেভাবে একা হাতে ইরাকের রাশ ধরে রেখেছিলেন, তাতে শ্রদ্ধা না জানিয়ে পারছি না। ২০০৩ সালে তার সাক্ষাৎকার নেয়ার সুযোগ পেয়েছিলাম। শুরুতেই সাদ্দাম হোসেন আমাকে বলেন, আপনাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে। খুব শিগগির বুঝতে পারবেন ইরাকে শাসনকার্য চালানো অত সোজা নয়। আপনারা না ভাষা বোঝেন, না জানেন ইতিহাস। আর আরব দেশের মানসিকতা বোঝা তো আপনাদের কর্মই নয়।
নিক্সনের মতে, সাদ্দাম হোসেন যে একেবারে খাঁটি কথা বলেছিলেন, তা এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। তিনিই ইরাকের উপযুক্ত শাসক ছিলেন। শিয়া অধ্যুষিত ইরানকে দমিয়ে রাখার ক্ষমতা ছিল তার। তিনি বর্বর ও অত্যাচারী বলে গলা চড়িয়েছিল অনেকেই। তা সত্ত্বেও তাকে সিংহাসনচ্যুত করা সহজ ছিল না। তার কঠোর দমননীতির জন্যই ইরাক জঙ্গি ঘাঁটি হয়ে দাঁড়ায়নি। বাগদাদের শিয়া সরকারের আমলে জঙ্গি সংগঠন আইএস যেভাবে নিজেদের প্রভাব বাড়িয়েছে, সাদ্দামের সুন্নি সরকার থাকলে তা সম্ভবই হতো না।
সাদ্দামের ব্যক্তিত্ব নিয়ে নিক্সন বলেছেন, একবার সাদ্দাম হোসেন বলেছিলেন, আগে মানুষ তর্ক-বিতর্ক করতো। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় এসে সকলকে এক সুরে গলা মেলাতে বাধ্য করেছিলেন।
নয় মাস গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর ২০০৩ সালে মার্কিন সেনা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন ইরাকের প্রাক্তন শাসক সাদ্দাম হোসেন। ২০০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর তার ফাঁসি হয়। তবে তাকে ফাঁসি দেয়া নিয়ে আজও বিতর্ক চলছে। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তৎকালীন মার্কিন সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
বিডি প্রতিদিন/১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬/ফারজানা