ইদানীং পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেলে বিভিন্ন ইস্যুতে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা গেছে দেশটির সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফেকে। আর এতেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে রাজনীতিতে আবারো এ বিতর্কিত সামরিক শাসকের প্রত্যাবর্তন হচ্ছে কিনা! স্থানীয় জনগণও এ নিয়ে কানাঘুষা করছেন।
আর এত গুঞ্জনের কারণটা হচ্ছে পাকিস্তানের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে তার সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়েছে। যেখানে মোশাররফ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির উপর জোর দিয়েছেন। পাশাপাশি পাকিস্তানের বর্তমান নির্বাচিত সরকার এবং ভারতের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। আর তাতেই পাকিস্তানের ভেতরে অনেকই মোশাররফের উদ্দেশ্য সম্পর্কে নানা ধরণের অনুমান শুরু করছেন।
জেনারেল মোশাররফের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হয় প্রতি রবিবার। অনুষ্ঠানটির নাম ‘সাব সে পেহেলে পাকিস্তান’ যার অর্থ ‘সবার আগে পাকিস্তান’। মোশাররফ যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তার প্রধান শ্লোগানও ছিল ‘সবার আগে পাকিস্তান’। অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা মোশাররফকে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে তার মতামত জানতে চান। এসব বিষয়ের মধ্যে রয়েছে রাজনীতি, অর্থনীতি, সামরিক এমনকি পরিবেশগত বিষয়। তিনি দুবাইতে বসেই এসব প্রশ্নের উত্তর দেন।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে জেনারেল মোশাররফ বাধ্য হয়ে ক্ষমতা ছেড়ে বিদেশে চলে যান। ২০১৩ সালে তিনি পাকিস্তানে ফিরে এসে নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলেও সেটি সম্ভব হয়নি। বেনজির ভুট্টো এবং একজন বালুচ উপজাতীয় নেতা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন তিনি। কারণ এ দুটো হত্যাকাণ্ডের সময় মোশাররফ ক্ষমতায় ছিলেন। এরপর তিনি চিকিৎসার জন্য দেশ ছেড়ে দুবাই যান। অনেকে মনে করেন, সামরিক বাহিনীর সহায়তায় মোশাররফ তখন দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন।
সম্প্রতি তিনি আবারো রাজনীতিতে আসার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। সম্ভাব্য রাজনৈতিক জোট নিয়ে তিনি বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনাও করেছেন। মোশাররফের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, পাকিস্তানে ফিরলে তিনি জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। যদি জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাওয়া যায়, তাহলে দেশে ফিরে মোশাররফ মামলা মোকাবেলা করবেন বলে তার সহযোগীরা দাবি করেছেন।