কাশ্মীর উপত্যকায় ‘মেগা ড্যাম’ গড়ে তোলার পরিকল্পনায় চরম আতঙ্কিত পাকিস্তান৷ তাই এবার নয়াদিল্লির কাছে প্রকল্পটির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়ে আবেদন করেছে ইসলামাবাদ৷ এছাড়াও একটি পাক প্রতিনিধি দলকে কাশ্মীরের জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির পরিদর্শনের অনুমতি দেওয়া হোক বলেও দাবি জানিয়েছে পাক সরকার৷
প্রায় দু’বছর পর সোমবার ইসলামাবাদে শুরু হয় ‘ইন্ডাস ওয়াটার কমিশন’-এর বৈঠক৷ ওই বৈঠক চলাকালীন সিন্ধু পানিবন্টন চুক্তি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিস্তর আলোচনা হয়৷ ওই বৈঠকে কাশ্মীর উপত্যকায় নির্মীয়মাণ তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চায় পাকিস্তান৷ চন্দ্রভাগা নদীর উপর ওই প্রকল্পগুলি হচ্ছে, পাকাল দুল, লোয়ার কালনাই ও মিয়ার৷ ইতিমধ্যে ভারতের বিরুদ্ধে সিন্ধু পানিবন্টন চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান৷ এনিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছেও নালিশ করেছে পাকিস্তান৷
উল্লেখ্য, উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ‘রক্ত ও পানি একসঙ্গে বইতে পারে না’ বলেও স্পষ্ট ভাষায় সিন্ধু পানিবন্টন চুক্তির পুনর্বিচারের কথা বলেছিলেন মোদি৷ সেইমতো সিন্ধু পানি বন্টন চুক্তির পুনর্বিচার করে এবার কাশ্মীর উপত্যকায় পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তুলতে চলেছে নয়াদিল্লি। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে, ১৮৫৬ মেগাওয়াটের ওই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে সবুজ সংকেত দিয়েছে পরিবেশমন্ত্রণালয় দ্বারা গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি। জম্মু ও কাশ্মীরের রামবান জেলায় চন্দ্রভাগা নদীর উপর এই প্রকল্পটি গড়ে তোলা হবে। পানি ধরে রাখতে নির্মান করা হবে প্রায় ১৯২.৫ মিটার উঁচু বাঁধ।
সিন্ধু পানিবন্টন চুক্তির মাধ্যমে প্রাপ্ত পানি পাকিস্তানের লাইফ লাইন। ওদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ পানি এই নদীগুলি থেকে যায়। এই নদীগুলির উপর পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করলে পাকিস্তানে পানির প্রবাহ কমে যাবে। ফলে চাপে পড়বে পাকিস্তান। ১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ূব খানের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে স্থির হয়, শতদ্রু, ইরাবতী, বিতস্তার পানি ভারত ব্যবহার করবে। অন্যদিকে, পাকিস্তান ব্যবহার করবে ঝিলম, সিন্ধু ও চন্দ্রভাগা নদীর পানি। পাকিস্তানের এই তিনটি নদীরই উৎস ভারত। তাই এবার নদীগুলিকেই হাতিয়ার করতে যাচ্ছে মোদি সরকার।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/২২ মার্চ ২০১৭/হিমেল