রাজনীতি থেকেই সন্ন্যাস নিতে চেয়েছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। কিন্তু দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথায় সেই রাস্তা থেকে সরে এসেছেন গায়ক ও মন্ত্রী বাবুল। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে সাম্প্রদায়িক সংর্ঘষের পর প্রথমে মন্ত্রীত্ব এবং পরে রাজনীতি থেকেই ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ বাবুল। নিজের সেই ইচ্ছার কথা মোদিকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এখনি তাকে সেই কাজ করতে বিরত থাকতে বলার পাশাপাশি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
সোমবার একাধিক টুইট করে বাবুল নিজেই এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আপনারা অবাক হবেন যে পশ্চিবঙ্গের আসানসোলে দুইটি জঘন্য ঘটনার পর আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করি। তাকে জানাই আমি মন্ত্রীত্ব থেকে ইস্তফা দিতে চাই। রাজনীতি ও ক্ষমতা ছেড়ে দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রী আমায় বললেন, 'পদত্যাগ কোরো না, লড়াই করো'।
রাম নবনীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ মার্চ থেকেই সাম্প্রদায়িক সংহিসতায় উত্তপ্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল-রানিগঞ্জ শহর। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গোটা রাজ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়। অশান্তি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আসানসোলসহ জেলার একাধিক জায়গায় জারি করা হয় ১৪৪ ধারা, বন্ধ রাখা হয় ইন্টারনেট সেবাও।
১৪৪ ধারা অমান্য করে ২৯ মার্চ আসানোলে প্রবেশের চেষ্টা করেন বাবুল। কিন্তু নিজের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাকে। এরপরই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তিনি। একসময় পুলিশের সাথে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে এই বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে। এরপরই সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন বাবুল। বাবুলের ওই মন্তব্যকে ঘিরে যথেষ্ট সমালোচনাও তৈরি হয়।
সোমবার সকাল থেকে একের পর এক টুইট। তবে বাবুলের এই টুইট ঘিরেও কিছুটা নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রথম টুইটে ইস্তফার ইচ্ছার কথা জানালেও পরে টুইটে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর কথাতেই তিনি ইস্তফা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তিনি লেখেন, আমি মোটেই পালিয়ে যাওয়ার ছেলে নই, আর ইস্তফার সাথে আসানসোলের ঘটনারও কোন সম্পর্ক নেই।
বাবুল জানান, আজ আমি সমস্ত মিথ্যা ও নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই করছি, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। তিনিই আমাকে বলেছিলেন যে কেমন করে এই সমস্ত জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াই করে উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, যেমনটা তিনি গুজরাটে করেছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/২ এপ্রিল, ২০১৮/ফারজানা