সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছেন এক যুবক। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে দেশের বিশ্বাসঘাতকদের গুলি করে মারার কথা বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। তারপরে এক সপ্তাহও কাটেনি। তার আগেই দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী মিছিলে পিস্তল হাতে চড়াও হলেন এক ব্যক্তি। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে গুলিও ছোড়েন তিনি। তাকে বাধা দেওয়া তো দূর, চোখের সামনে সব কিছু দেখেও কার্যত নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে দিল্লি পুলিশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার মহাত্মা গান্ধীর ৭২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সিএএ বিরোধী নিয়ে মিছিল নিয়ে রাজঘাটের দিকে এগোচ্ছিলেন জামিয়া শিক্ষার্থী এবং সাধারণ মানুষের একটি দল। এজন্য আগে থেকেই ওই এলাকায় বিশাল পুলিশ মোতায়েন ছিল। তাদের মিছিল আটকাতে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে বসানো হয়েছিল ব্যারিকেডও। এ কারণে সামনে এগোতে না পেরে ব্যারিকেডের সামনেই রাস্তায় বসে পড়েন আন্দোলনকারীরা। সেই সময়ই তাদের উপর চড়াও হন অভিযুক্ত ওই যুবক।
আন্দোলনকারীদের মোবাইলে তোলা গোটা ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। তাতে দেখা গেছে, ব্যারিকেডের উল্টো দিকে পুলিশের জমায়েত রয়েছে। তাদের সামনেই পিস্তল হাতে রাস্তার উপর দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত যুবক। পরনে রয়েছে সাদা ট্রাউজার এবং কালো জ্যাকেট।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, পিস্তল উঁচিয়েই আন্দোলনকারীদের শাসাতে শুরু করেন অভিযুক্ত। বলেন, ‘‘কিসকো আজাদি চাহিয়ে? ম্যায় দুঙ্গা আজাদি। ইয়ে লো আজাদি।’’ তার পরেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিয়ে আন্দোলনকারীদের দিকে তিনি গুলি ছোড়েন বলে অভিযোগ।
আচমকা এই ঘটনায় হতচকিত হয়ে পড়লেও আন্দোলনকারীরাই অভিযুক্তকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম গোপাল। বয়স ৩১ বছর। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন কি না, তা এখনও জানা যায়নি। তবে ‘রামভক্ত গোপাল’ নামে ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার। তাতে শাহিন বাগের আন্দোলনকে শেষ করার একাধিক হুমকি দিয়েছেন তিনি। হামলার আগে এদিন ওই অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভও করেন তিনি।
অন্যদিকে, অভিযুক্তের গুলিতে শাদাব নামের জামিয়ার এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তার হাতে গুলি লেগেছে। তিনি জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। হামলার পর প্রথমে তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স (এমস)-এর ট্রমা সেন্টারে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব