ভারত আর চীনের মধ্যে যে সংঘর্ষে অন্তত ২৩ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে লাদাখে, তা নিয়ে দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। ভারতের অভিযোগ যে চীন একতরফাভাবে স্থিতাবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চেয়েছিল, অন্যদিকে চীন ভারতীয় বাহিনীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলেছে তারাই চীনা বাহিনীর সদস্যদের আক্রমণ করেছিল।
চীনের এক সামরিক মুখপাত্র এই প্রথম মুখ খুলেছেন বিষয়টি নিয়ে। চীনের সরকারি পত্রিকা পিপলস্ ডেইলি সেই বিবৃতি ছেপেছে। পিপলস লিবারেশন আর্মির পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের মুখপাত্র ঝ্যাং শুইলি কে উদ্ধৃত করে পিপলস ডেইলি লিখেছে, ভারতীয় সৈন্যরা তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে আবারও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে বেআইনি কাজ চালাচ্ছিল এবং ইচ্ছে করে প্ররোচণা দেয় আর চীনা বাহিনীকে আক্রমণ করে। তারই ফলশ্রুতিতে দুই পক্ষের মধ্যে 'ভয়ঙ্কর' শারীরিক সংঘাত হয় এবং হতাহত হয়।
ঝ্যাং আরো বলেছেন, ভারতের উচিত তাদের বাহিনীকে কঠোরভাবে সংযত করা। নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন ও প্ররোচণা দেওয়া বন্ধ করে তাদের উচিত চীনের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তি করা।
এদিকে, পিপলস্ ডেইলির মালিকানাধীন ট্যাবলয়েড পত্রিকা 'গ্লোবাল টাইমস' বুধবার একটি সম্পাদকীয় লিখেছে, যেখানে ভারতের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়, চীন-ভারত সীমান্তে সবসময়েই উত্তেজনা বিরাজ করার পিছনে ভারতের দম্ভ আর অদূরদর্শী মনোভাবই দায়ী। সম্প্রতি নতুন দিল্লি সীমান্ত ইস্যু নিয়ে একটা কঠোর মনোভাব নিয়েছে, যা দুটি ভুল মূল্যায়নের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে।
তারা মনে করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত চাপের ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক তিক্ত করতে চাইবে না চীন। তাই ভারতের তরফে প্ররোচণা দেওয়া হলেও হয়তো চীন প্রত্যাঘাত করবে না। এছাড়াও ভারতের কিছু মানুষের মনে ভুল ধারণা আছে যে তাদের নিজেদের বাহিনী চীনের বাহিনীর থেকে বেশি শক্তিশালী। এই দুটি ভুল ধারণাই ভারতের মতামতের যৌক্তিকতাকে প্রভাবিত করে চীন সংক্রান্ত নীতিনির্ধারণের সময়ে। এমনটাই লিখেছে গ্লোবাল টাইমস।
ওই সম্পাদকীয়তে আরো লেখা হয়েছে, ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে চায় না চীন। তারা আশা করে দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত সমস্যাগুলো শান্তিপূর্ণভাবেই মেটানো যাবে। এটা চীনের বদান্যতা, দুর্বলতা নয়। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক
