সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এরপর মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সৈন্যরা নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করে। বিদেশি সেনারা আফগানিস্তানের মাটি ছাড়তেই আফগান বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবানের মধ্যে তুমুল লড়াই শুরু হয়। এই লড়াইয়ে আগ্রাসী হয়ে উঠেছে তালেবান। প্রতিদিনই দেশটির নতুন নতুন এলাকা তাদের দখলে নিচ্ছে।
অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র আর মার্কিন প্রশিক্ষণ সত্ত্বেও তালেবানের সামনে রীতিমতো তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে আফগান সরকারের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। পুরো আফগানিস্তানে যখন এই রকম সংকটময় পরিস্থিতি তখন পদত্যাগের পরই দেশ ছেড়েছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী খালিদ পায়েন্দা। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান দেশটির এক চতুর্থাংশের বেশি প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নেয়ার পরই তিনি পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন।
এদিকে, এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যেই আফগানিস্তানের ৯ প্রাদেশিক শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। গত শুক্রবার থেকে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের ফাইজাবাদ, ফারাহ, পাল-ই-খুমরি, সার-ই-পাল, সেবেরঘান, আইবাক, কুন্দুজ, তালুকান এবং জারাঞ্জ শহর দখল করে নিয়েছে তালেবান। গত মে মাস থেকেই আগ্রাসী হয়ে উঠেছে তালেবান।
আফগান বাহিনীকে পুনর্গঠনে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে আমেরিকা। তৈরি করা হয়েছে কমান্ডো ইউনিট আর বিমান বাহিনী। তবে কাড়ি কাড়ি অর্থ, প্রশিক্ষণ আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিপরীতে তুলনামূলক পুরনো সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ত্রাসের সৃষ্টি করছে তালেবান।
গেল মাসে তালেবানের কাছে আফগান সেনাদের এমন আত্মসমর্পণের ঘটনায় সৃষ্টি হয় তোলপাড়। তালেবানের হামলার ভয়ে অনেকেই পালিয়ে যায়, পার্শ্ববর্তী দেশ তাজিকিস্তানে। তালেবানের মুহুর্মুহু হামলার সামনে কোণঠাসা আফগান সামরিক বাহিনী। প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে, তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ছে আফগান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ফলাফল, দেশটির উল্লেখযোগ্য অংশের নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানের হাতে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক