রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করার আগে থেকেই গত পাঁচ বছরে ইউরোপে অস্ত্র বিক্রি আগের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেড়েছে। যদিও অস্ত্রের বৈশ্বিক বাণিজ্য ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। স্টকহোম পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এসআইপিআরআই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইউরোপের দেশগুলো বিগত পাঁচ বছরের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি অস্ত্র আমদানি করেছে। এর মধ্যে নরওয়ে ৩৪৩ শতাংশ, নেদারল্যান্ডস ১১৬ শতাংশ এবং যুক্তরাজ্য ৭৪ শতাংশ সামরিক ব্যয় বাড়িয়েছে।
এসআইপিআরআই রিপোর্ট বলছে, এই সময়কালে বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসা চার দশমিক ছয় শতাংশ কমলেও ইউরোপের ব্যবসা বেড়েছে প্রায় ১৯ শতাংশ। এর থেকেই বোঝায় যায়, গত পাঁচ বছরে ইউরোপে রাজনৈতিক উত্তেজনা কী পরিমাণ বেড়েছে।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইউরোপে অস্ত্র ব্যবসা বাড়তে শুরু করেছে ২০১৪ সাল থেকে। রাশিয়া ক্রাইমিয়ায় হামলা চালানোর পর একাধিক দেশ সামরিক খাতের বাজেটও অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এসআইপিআরআই-এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ইয়ান অ্যান্টনি জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউরোপের দেশগুলো অস্ত্রের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে শুরু করে এবং প্রায় প্রতিটি দেশই অস্ত্রখাতে ব্যয় বাড়ায়। রিপোর্টে তার স্পষ্ট প্রতিফলন আছে।
এসআইপিআরআই-এর সিনিয়র গবেষক পিটার ডি. ওয়েজম্যান দাবি করেছেন, ইউরোপের দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার সম্পর্কের মারাত্মক অবনতির কারণে ইউরোপে অস্ত্র আমদানি বেড়েছে। আর এটি ট্রান্স-আটলান্টিক নিরাপত্তা সম্পর্কের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বিশ্বের পাঁচটি দেশ বিশ্বের অস্ত্র ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে। দেশগুলো হল- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স, চীন ও জার্মানি। সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করে অ্যামেরিকা। এরপরে রয়েছে রাশিয়া। কিন্তু রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, গত পাঁচ বছরে রাশিয়ার অস্ত্র বিক্রি কমেছে প্রায় ২৬ শতাংশ। এর সবচেয়ে বড় কারণ ভারত এবং ভিয়েতনাম রাশিয়া থেকে অস্ত্র কেনার পরিমাণ কমিয়েছে।
জার্মানি অস্ত্র বাণিজ্যে বিশ্বের পঞ্চম শক্তি। কিন্তু পাঁচ বছরে তাদের অস্ত্র ব্যবসা কমেছে ১৯ শতাংশ। অ্যামেরিকার ব্যবসা বেড়েছে ১৪ শতাংশ। তবে চোখে পড়ার মতো অস্ত্র ব্যবসা বেড়েছে ফ্রান্সের, ৫৯ শতাংশ। সূত্র : জেরুজালেম পোস্ট/ডিডাব্লিউ নিউজ
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর