ডলার বাদ দিয়ে, তেল বিক্রিতে চীনের মুদ্রা ইউয়ানে লেনদেনের বিষয়ে আলোচনা করেছে চীন ও সৌদি আরব। সম্প্রতি এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে, ছয় বছর ধরেই ইউয়ানে লেনদেনের বিষয়টি আলোচনা করছে চীন। তবে সম্প্রতি এ আলোচনা আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের আরও বেশি অবণতি হয়েছে। সৌদি আরবের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্র অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ইয়েমেন-ইরানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সৌদি আরবের পাশে দাঁড়ায়নি যুক্তরাষ্ট্র। আর তাতেই নাখোশ সৌদি সরকার।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ও রাশিয়া ডলারের প্রভাব খর্ব করে নিজস্ব মুদ্রার প্রভাববলয় সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। এ লক্ষ্যে তারা ডলারের পরিবর্তে বিকল্প মুদ্রায় বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে। এবার বিশ্বের বৃহত্তম তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব তেল বিক্রিতে ডলারের পরিবর্তে ইউয়ান গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করছে। সৌদি আরব ইউয়ান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে এ লক্ষ্যে একধাপ এগিয়ে যাবে চীন।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই আমদানি-রফতানির জন্য ডলারের ওপর নির্ভরশীল। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র এসব দেশের অর্থনীতিতে চাপ প্রয়োগের ক্ষমতা রাখে। সংশ্লিষ্ট সরকারের সাথে মনোমালিন্য বা বিবাদে জড়ালে যুক্তরাষ্ট্র বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আটকে নিয়ে তাদের শর্ত মানতে বাধ্য করতে পারে। যেমনটা দেখা গেছে আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আটকে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তাদের আমদানি-রফতানি ব্যাহত হচ্ছে এবং অর্থনীতি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জের ধরে রাশিয়ার ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এতে রাশিয়ার মুদ্রার মান কমে গেছে, মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে।
বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যাতে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের মুখাপেক্ষী না হয়ে থাকতে হয় তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া ও চীন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা