আফগানিস্তানের কাবুলে আল–কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে হত্যায় ছোড়া ড্রোনটি কিরগিজস্তানের বিমানঘাঁটি থেকে ছোড়া হয়ে থাকতে পারে। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যমে এমন দাবি করা হয়েছে। এ নিয়ে পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
গত রোববার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ ড্রোন হামলায় আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরিকে হত্যার দাবি করেন। তাদের দাবি সত্য হলে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর কাবুলে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম হামলা।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, রোববার তালেবান নিয়ন্ত্রিত কাবুলের একটি সুরক্ষিত বাড়ির ব্যালকনিতে আয়মান আল-জাওয়াহিরি পা রাখামাত্রই দুটি হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সেখানে হামলা চালানো হয়। তবে ড্রোনটি কোথা থেকে ছোড়া হয়েছে মার্কিন প্রশাসন তা প্রকাশ করছে না।
বেশ কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম দাবি করছে , উত্তরাঞ্চলীয় কিরগিজস্তানের মানাসে গানচি বিমানঘাঁটি থেকে হামলাটি করা হয়েছে।
গানচি কিরগিজস্তানের সাবেক মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। বিশকেক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত এই ঘাঁটিটি মার্কিন সেনারা পরিচালনা করতেন। ২০১৪ সালের জুনে কিরগিজ সেনাবাহিনীর কাছে এটি হস্তান্তর করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রেডিও নিউজ নেটওয়ার্ক দ্য ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওর (এনপিআর) প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, আফগানিস্তানের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের এখন আর কোনো সামরিক ঘাঁটি নেই। তার মানে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগে চালকবিহীন ড্রোনটির দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক গবেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ড্রোন হামলায় পাকিস্তানের সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। অভিযানে পাকিস্তানের একেবারেই ভূমিকা ছিল না তা– বিশ্বাস করেন না তিনি। এ গবেষক মনে করেন, আকাশসীমা এবং গোয়েন্দা সহযোগিতার মাধ্যমে পাকিস্তান দুভাবে সহযোগিতা করে থাকতে পারে।
কুগেলম্যান বলেন, ভূগোল মিথ্যা বলে না। পারস্য উপসাগরীয় ঘাঁটি থেকে যদি ড্রোনটি উৎক্ষেপণ করা হতো, তাহলে এটি ইরান দিয়ে উড়ে আসতে পারত না। মধ্য এশিয়ার আকাশসীমা এ ক্ষেত্রে উল্টো পথ। দ্রুত অভিযান চালানো এ ক্ষেত্রে কঠিন।
কুগেলম্যান মনে করেন, এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের আকাশসীমা মার্কিন গোয়েন্দাদের জন্য সবচেয়ে আকাঙ্ক্ষিত উপায়। তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, কেউ না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র কি একাই সব করতে পারত? তিনি মনে করেন, পাকিস্তান না হলেও তালেবানের কিছু সংখ্যক দলত্যাগী সদস্য যুক্তরাষ্ট্রকে তথ্য দিয়ে থাকতে পারে। আফগানিস্তানের মধ্য এশীয় প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নেওয়ার সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না কুগেলম্যান।
এদিকে কাবুলে এক তালেবান কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, ড্রোন হামলায় আয়মান আল জাওয়াহিরির হত্যার বিষয়টি তারা তদন্ত শুরু করেছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য থেকে খবরটি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন স্বতন্ত্রভাবে ড্রোন হামলায় জাওয়াহিরির নিহত হওয়া কিংবা ড্রোনটি কোথা থেকে এসেছে সে তথ্য যাচাই করতে পারেনি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল