আগামী শীতে (জানুয়ারি) ঠাণ্ডা আবহাওয়ার পাশাপাশি গ্যাস সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। এমন অবস্থায় বিদ্যুতের চাহিদা সমন্বয়ের জন্য দেশটির শিল্পকারখানাসহ আবাসিকে বেশ কিছুদিন পরিকল্পনামাফিক লোডশেডিং দেওয়া হতে পারে।
ডেইলি মেইলের খবর অনুসারে, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং গ্যাস সঙ্কটের কারণে লোডশেডিংয়ে যুক্তরাজ্যের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং আবাসনে প্রভাব পড়বে। রেল, লাইব্রেরি এবং অন্যান্য সরকারি ভবনও বন্ধ রাখা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, আসন্ন শীতে সরকারের বিদ্যুতের চাহিদার ছয় ভাগের এক ভাগ পূরণের সক্ষমতা থাকতে পারে।
লোডশেডিংয়ে যেন খাবারের সঙ্কট দেখা না দেয় সে জন্য খাদ্য বিভাগকে ইতোমধ্যে পরিকল্পনা সাজাতে বলা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রীরা এনএইচএস কর্মকর্তাদের জেনারেটর সঠিকভাবে সার্ভিসিং করা এবং ‘ডিজেল ট্যাঙ্ক পূর্ণ’ রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন।
যদিও বাণিজ্য, জ্বালানি এবং শিল্প বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সম্ভাব্য লোডশেডিংয়ের রিপোর্ট মনগড়া এবং বিভ্রান্তিকর। এমনটি ঘটবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইউরোপের মতো যুক্তরাজ্য রাশিয়ার জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীল নয়। আমাদের নিজস্ব উত্তর সাগরের গ্যাস রিজার্ভে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। নির্ভরযোগ্য অংশীদার থেকে সুস্থির আমদানি রয়েছে, তাছাড়া আছে ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম এলএনজি বন্দর অবকাঠামো, গ্যাস সরবরাহ আইনগতভাবে চুক্তি করা আছে যার অর্থ– আবাসিক, ব্যবসা এবং শিল্পসমূহ বিদ্যুৎ এবং গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকতে পারে।
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি নতুন নেতৃত্ব বাছাই করতে যাচ্ছে। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি দলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে দাঁড়িয়েছে। নেতৃত্বের দৌড়ে থাকা দুই প্রার্থী ঋষি সুনাক ও লিজ ট্রাস আসন্ন কঠিন সময়ে জনগণকে সমর্থনের অঙ্গীকার করছেন।
এদিকে জ্বালানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (কনসালটেন্সি) কর্নওয়াল ইনসাইট ভবিষ্যতদ্বাণী করেছে, জানুয়ারিতে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল ১ হাজার ৯৭১ পাউন্ড থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩ হাজার ৫৮২ পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে। যুক্তরাজ্যের গ্যাস ও বিদ্যুৎ মার্কেট কর্তৃপক্ষ জানুয়ারির মধ্য আবাসিকে বিল গড়ে ৪ হাজার ২৬৬ পাউন্ড নির্ধারণ করতে পারেন।
অর্থ সঞ্চয় বিশেষজ্ঞ মার্টিন লুইস গ্যাস ও বিদ্যুতের বিল বৃদ্ধিকে ‘করুণ সংবাদ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, বর্ধিত মূল্যের ভার লাখ লাখ মানুষ বহন করতে সক্ষম হবে না। সরকারের প্রতি অবিলম্বে তিনি কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
খবরে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে যুক্তরাজ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর জন্য আংশিকভাবে ইউক্রেন যুদ্ধ দায়ী।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল