আর মাত্র ক’দিন পরই মুসলমানদের সবছেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে দেশীয় পদ্ধতিতে পশু-লালন পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। এবার হবিগঞ্জ জেলায় দেশীয় পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা। যে কারণে জেলার বাহির থেকে গরু আসার প্রয়োজন নেই বলে মনে করছেন খামারিরা। তবে সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসা নিয়ে তাদের রয়েছে শঙ্কা।
খামারিরা বলছেন, ভারতীয় গরু আসলে লোকসানে পরবেন তারা। যদিও প্রশাসন বলছে- সীমান্ত রক্ষীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন সীমান্তে। যে কোন ধরনের অপতৎপরতা রোধে তারা সর্বদা প্রস্তুত রয়েছেন।
জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে এবার জেলার ৯টি উপজেলায় প্রায় ৭ হাজার ২শ ৯৯টি ছোট-বড় গরুর খামার রয়েছে। আর এসব খামারে লালন-পালন করা হচ্ছে ৭১ হাজার ৭৪৬টি পশু। যদিও এবার জেলায় কোরবানির চাহিদা রয়েছে ৭০ হাজার ৫৮৩টি। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন খামারগুলোতে চলছে শেষ সময়ের মোটাতাজাকরণের কাজ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খামারে নিয়োজিত শ্রমিকরা দেশীয় পদ্ধতিতে গরুর যত্নে তৎপর রয়েছেন। শ্রমিকরা সবুজ ঘাস, খইল, ভুষি, খড় কচুরিপানাসহ দেশি প্রযুক্তির খাবার দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন।
আলাপকালে খামারিরা বলেন, প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা সারা বছর পশু লালন পালন করেন। তাই তারা এখন শেষ পর্যায়ে এসে খামারে থাকা পশুগুলোকে মোটা তাজাকরণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। খামারিরা বলছেন- অন্য বছরের তুলনায় এবার গো-খাদ্যের দাম কিছুটা বেশি। যে কারণে গত বছরের ছেয়ে এবার দাম কিছুটা বাড়তে পারে। তারা বলেন- দাম বাড়ার ছেয়েও আমরা ভারতীয় গরু দেশে আসা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। ভারতীয় গরু যদি দেশের বাজারে আসে তা হলে তারা লোকসানে পরবেন।
এদিকে, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নিশাপট গ্রামের খামারি তারেকুল ইসলাম সুজন লালন-পালন করছেন শাহিওয়াল জাতের ২০ মণ ওজনের একটি ষাড়। যার নাম রাখা হয়েছে ‘কালো জিল্লু’। গরুটি এক বছর ধরে দেশীয় প্রদ্ধতিতে লালন-পালন করেছেন তিনি। যার দাম চাওয়া হচ্ছে ৬ লাখ টাকা। গরুটি দেখতে খামারে প্রতিদিন আসছেন অনেক দর্শনার্থী। একই গ্রামের শামীম মিয়া তার খামারে লালন-পালন করেছেন শাহিওয়াল জাতের ‘কালা রাজা’ ও ‘লাল রাজা’ নামে দুইটি ষাড়। ষাড় দুটির ওজন ৯ থেকে ১০ মন। তিনিও ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা পেলেই গরু দুটি বিক্রি করতে চান।
হবিগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুল কাদের বলেন, এবার জেলার কোরবানির পশুর চাহিদা স্থানীয় খামারে উৎপাদিত পশুতেই মিটবে। ভারতীয় গরু আসার বিষয়ে তিনি বলেন- ভারতীয় গরু আসার কোন সম্ভাবনা নেই। এই বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। তারা অপতৎপরতা রুখতে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়াও গরু মোটা তাজাকরণে খামারিরা যাতে করে কোন ধরনের ইনজেকশন বা অবৈধ পন্থা অবলম্বন না করে সে জন্য তাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও নজরদারি করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত