কোরবানি সামনে রেখে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে আমদানি হয়েছে পর্যাপ্ত মসলা জাতীয় পণ্য। সরবরাহ চেইন ঠিক থাকায় বাজারও রয়েছে স্থিতিশীল। ফলে দেশের প্রধান এ বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম রয়েছে কমতির দিকে। তবে বাজার বিশ্লেষকদের শঙ্কা- কোরবানির আগে কারসাজি সিন্ডিকেট সক্রিয় হলে ফের অস্থির হয়ে উঠবে বাজার। তাই কারসাজি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন।
সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাব মতে- দেশে প্রায় ৫০ ধরনের মসলা ব্যবহার হয়ে থাকে। বছরে মসলাজাতীয় পণ্যের চাহিদা ৩৫ লাখ টনের বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৪০-৪২ শতাংশ চাহিদা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। বাংলাদেশে মসলার বাজার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার। আমদানিকৃত মসলার বাজার ৯০০ কোটি টাকার মতো। ঈদসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান ঘিরে দেশে বেড়ে যায় মসলার চাহিদাও।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘কোরবানি সামনে রেখে মসলাজাতীয় পণ্যের পর্যাপ্ত আমদানি হয়েছে। মজুতও রয়েছে পর্যাপ্ত। তাই মসলার দাম কমতির দিকে রয়েছে। তবে এখনো প্রত্যাশিত বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। ঈদের সময় ঘনিয়ে আসছে। আশা করছি সামনে কেনাবেচা বাড়বে।’ খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান শুরু হওয়ার মাস দুয়েক আগ থেকেই কোরবানি সামনে রেখে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য এলাচি, পিঁয়াজ, রসুন, ধনিয়া, মরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি এবং তেজপাতাসহ অন্যান্য মসলাজাতীয় পণ্য আমদানির এলসি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে আমদানিকারকরা কিছু পণ্য খালাস করে গুদামজাত করেছেন। আরও কিছু মসলাজাতীয় পণ্য রয়েছে খালাসের অপেক্ষায়। কোরবানির চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ও মজুত পর্যাপ্ত থাকায় গতবারের চেয়ে অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের বাজার। ফলে গত কয়েক দিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে মসলাজাতীয় পণ্যের দাম। নাম প্রকাশ না করার শর্তে খাতুনগঞ্জের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘খাতুনগঞ্জের মসলার বাজার ঘুরেফিরে নিয়ন্ত্রণ করেন হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী। তাদের মর্জির ওপর নির্ভর করে বাজারের উত্থান-পতন। তাদের কারসাজি সক্রিয় হলে অস্থির হয়ে উঠবে মসলার বাজার। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’ চট্টগ্রাম কাস্টমসের দেওয়া তথ্য মতে- কোরবানিতে সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে আমদানি হওয়া মসলা দ্রুত সময়ের মধ্যে খালাস করতে কাস্টমস থেকে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমদানি মসলাজাতীয় পণ্যগুলোর মধ্যে ভারত থেকে জিরা এবং এলাচ, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম এবং গুয়েতেমালা থেকে লবঙ্গ, দারুচিনি এবং অন্যান্য মসলাজাতীয় পণ্য এসেছে।