হোয়াইট হাউসের এক কোণ, যা সাধারণত ফার্স্ট লেডির পদচারণায় মুখর থাকে, এখন যেন তা এক রহস্যের চাদরে ঢাকা। দিনের আলোতেও জানালাগুলো বন্ধ, পর্দা টানা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প যেন এক অদৃশ্য ছায়া।
প্রশাসনের সূত্রগুলো বলছে, তিনি হোয়াইট হাউসে আসেন। তবে কখন এবং কতক্ষণের জন্য, তা স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না কেউই। জনসমক্ষে তার উপস্থিতি বিরল, যেন তিনি গ্রেটা গার্বোর মতো নিভৃতচারী।
সূত্র বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ১০৮ দিনে তিনি ১৪ দিনেরও কম সময় হোয়াইট হাউসে কাটিয়েছেন।
ইতিহাসবিদ ক্যাথরিন জেলিসন এই পরিস্থিতিকে বেস ট্রুম্যানের সময়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যিনি প্রায় ৮০ বছর আগে হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা ছিলেন। জেলিসন বলেন, মিসেস ট্রাম্পের মতো মিসেস ট্রুম্যানও সুযোগ পেলেই নিজের 'হোম বেস'-এ ফিরে যেতেন।
মেলানিয়া ট্রাম্পের অনুপস্থিতি নিয়ে হোয়াইট হাউসের অন্দরমহলে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তার কর্মীরা নিযুক্ত থাকলেও, তিনি অফিসে খুব কমই যান। মার-এ-লাগোর নিয়মিত অতিথিরাও তাকে সেখানে তেমন দেখেন না।
গত বছর ট্রাম্প দম্পতির জন্য কঠিন সময় ছিল। ট্রাম্পের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে বিচার, হত্যা প্রচেষ্টা এবং নির্বাচনী প্রচার, সবকিছু মিলিয়ে তাদের ব্যক্তিগত জীবনে ঝড় বয়ে গেছে।
সূত্রের খবর, পর্ন তারকার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আর্থিক লেনদেনের বিচার মেলানিয়ার জন্য বিশেষ কষ্টকর ছিল। তিনি আদালত এবং নির্বাচনী প্রচার থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখেন।
ট্রাম্পের নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েও তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। ২০১৭ সালের অভিষেকের সময়ও তিনি শোভাযাত্রায় হাঁটতে দ্বিধা বোধ করেছিলেন।
হোয়াইট হাউসে এখন ফার্স্ট লেডির অনেক দায়িত্ব ট্রাম্প নিজেই পালন করছেন। আলোর সরঞ্জাম নির্বাচন থেকে শুরু করে রোজ গার্ডেন সাজানো, সবই তিনি করছেন।
অ্যামাজনের সঙ্গে ৪০ মিলিয়ন ডলারের একটি ডকুমেন্টারি চুক্তি করেছেন মেলানিয়া। এই ডকুমেন্টারিতে ফার্স্ট লেডি হিসেবে তার জীবনের অন্তরালের দৃশ্য দেখানো হবে বলে জানা গেছে। তবে, ঠিক কী দেখানো হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। হোয়াইট হাউসের এই নীরবতা ও রহস্য যেন আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল