খুলনায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত সবচেয়ে বড় গরু হিসেবে দাবি করা ‘রাজা মানিক’কে গোয়ালঘর ভেঙে বের করতে হবে। ডুমুরিয়া উপজেলার রঘুনাথপুরে মিনু সাহা প্রায় চার বছর ধরে গরুটি লালনপালন করছেন। ৩০ থেকে ৩৫ মণ ওজনের গরুটির দাম চাওয়া হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা। তবে ১২ লাখ টাকা হলেই তা বিক্রি করবেন এই খামারি। গত বছর গরুটি ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা দামাদামি হলেও শেষ পর্যন্ত দালাল চক্রের কারণে বিক্রি করা যায়নি।
‘হলস্টিন ফ্রিজিয়ান’ প্রজাতির গরুটি লম্বায় প্রায় ৮ ফুট, উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট। ১৫ ফুট বাই ১৩ ফুট গোয়ালঘরে একাই রাখা হয় রাজা মানিককে। এলাকার ছোট বড় সবার কাছেই প্রিয় বিশাল আকৃতির গরুটি। অনেকে আগ্রহ নিয়ে দেখতে আসে শান্ত প্রকৃতির গরুটিকে। ছোটরা আদর করে নাম দিয়েছে রাজা আর খামারি মিনু সাহা ডাকেন মানিক নামে। সব মিলিয়ে গরুটি এখন ‘রাজা মানিক’ নামেই পরিচিত।
মিনু সাহা জানান, নিজের গোয়ালে জন্ম নেওয়া গরুটির যখন সাত মাস বয়স তখন এর দাম ধরা হয় ৭৫ হাজার। কিন্তু ক্রেতারা ৭২ হাজার বলায় তখন বিক্রি হয়নি। এরপর অনেকটা সময় কেটে গেছে। এখন রাজা মানিক এই পরিবারের সদস্যদের মতো। প্রতিদিনের দেওয়া খাবার কম হলে রেগে যায় রাজা মানিক। আবার রাতে মশা কামড় দিলে টিনের চালে লেজ দিয়ে ‘ঠাস ঠাস’ শব্দ করে জানান দেয়। খামারি মিনু সাহাকে না দেখলে মাঝেমধ্যে অভিমান হয়। তখন খামারের অন্য সহকর্মীরা কাছে গেলে রেগে যায়। আবার মিনু সাহা কাছে গেলেই যেন শান্ত সন্তানের মতো শান্ত রাজা মানিক। আবেগাপ্লুত মিনু সাহা বললেন, যেদিন গরুটি বিক্রি হবে, যেদিন ওকে নিয়ে যাবে সেদিন আমি বাড়িতে থাকতে পারব না। গরুটি আমার খুবই আদরের। রাজা মানিকের মা গাভিটিও এই বাড়িরই আলাদা গোয়ালঘরে থাকে। সেখানে আরও কয়েকটি গরুর জন্ম দিয়েছে গাভিটি। কিন্তু কোনোটি রাজা মানিকের মতো বড় আকারের হয়নি। প্রতিদিন এটি গমের ভুসি, খুদ চালের ভাত ও রান্না করা ভুট্টা খেয়ে থাকে। মাঝে মধ্যে লতাপাতা খাওয়ানো হয়। মিনু সাহা এক সময় এনজিওতে চাকরি করতেন। বাড়িতেই বিশাল মুরগির খামার ছিল তার। খামারে ১০-১৫ জন কর্মচারী ছিল। তবে কয়েক বছর আগে বার্ড ফ্লুতে প্রায় ১৬ হাজার মুরগি মারা যাওয়ার পর তিনি মুরগির খামার থেকে সরে আসেন। সেই থেকে গরু লালনপালনের দিকে ঝোঁকেন মিনু সাহা।