ঝাপোরিঝঝিয়া কিংবা খেরসনে অশান্তি থাকলেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ অনেকটা আতঙ্কমুক্তই ছিল এতোদিন। কেননা ইউক্রেন অভিযানের শুরুর দিকে কিয়েভের কিছু এলাকা রুশ সেনারা নিয়ন্ত্রণে নিলেও মার্চের শেষ নাগাদ সেখান থেকে তারা সরে আসতে শুরু করে।
এরপর কিয়েভে আর কোনো হামলার খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়াও কিয়েভ দখলে আর কোনো তৎপরতা চালায়নি।
তবে ক্রিমিয়ান সেতুতে বিস্ফোরণের পর দৃশ্যপট বদলে গেছে। ক্রিমিয়ার সাথে স্থলপথে যোগাযোগের একমাত্র সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ফের ইউক্রেন ইস্যুতে আগ্রাসী রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যোগ্য জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকেই আবার আতঙ্কের রাজধানী হয়ে উঠছে কিয়েভ। হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছেন।
সোমবার সকাল পর্যন্ত কিয়েভের বোমা শেল্টার কেন্দ্রগুলো ছিল একেবারে শূন্য। আতঙ্ক ছেড়ে প্রায় সবাই ফিরেছিলেন স্বাভাবিক জীবনে। তবে দিনের আলোর সাথে পাল্লা দিয়ে বদলেছে দৃশ্যপট, সেই শহরে আবারও বোমার শব্দ, বারুদের গন্ধ। আতঙ্ক চারিদিকে।
ক্রিমিয়ান সেতুতে বিস্ফোরণের দায় সরাসরি না নিলেও এই ঘটনায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিল ইউক্রেন। ফলাও করে তারা একে রুশ পতনের প্রতীক হিসেবে নানা মাধ্যমে প্রচারও করেছে।
ইউক্রেনের এই উদযাপনকে ভালোভাবে নেয়নি রাশিয়া। পুতিন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়াতেই পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সোমবার সরাসরি কোনো রকম রাখঢাক না করেই ‘কর্কশ হামলার’ সতর্কতা দিয়েছেন এই রুশ নেতা।
বিশ্লেকরাও মনে করছেন, পুতিন ক্রিমিয়ান সেতু বিস্ফোরণের প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হবেন। ফলে সামনের দিনে ইউক্রেনে আরও ভয়াবহ কিছু ঘটতে পারে।
তবে বিশ্লেষকদের অনেকেরই দাবি, পুতিন যতোটা গর্জন তুলছেন ততোটা তিনি কাজে দেখাতে পারবেন না। কারণ, হিসেবে বলছে রাতারাতি যুদ্ধ পরিস্থিতি বদলে দেওয়ার মতো নিরঙ্কুশ ক্ষমতা এখন পুতিনের নেই।
আবার কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, রাশিয়া এ সপ্তাহ আগেই ইউক্রেনে হামলা চালানোর ক্ষেত্র তৈরি করেছে। তারা মনে করেন, ইউক্রেনে আধিপত্য হারাতে বসা রাশিয়ার পুনর্জাগরণে এমন কোনো বিকল্প ব্যবস্থারই দরকার ছিল।
সূত্র: আল জাজিরা
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল