বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিসহ লাখো বিদেশীকে মুক্তি প্রদানের প্রস্তুতি নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন দফতর। রিপাবলিকানরা সীমান্ত সুরক্ষাসহ অভিবাসন দফতরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়টি বাজেটে সাঁয় না দেয়ায় ডেমক্র্যাটরা এমন ডিটেনশন সেন্টার খালি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে হোয়াইট হাউজের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদ প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, সীমান্ত সুরক্ষাসহ অভিবাসনের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইচ্ছায় বাজেটে ৬ বিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু রিপাবলিকানরা সিনেটে পাশ হওয়া বিল থেকে তা বাদ দিতে বাধ্য করেছেন। এজন্য বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়া বিদেশীদের মধ্যে যারা সীমান্তরক্ষী কর্তৃক গ্রেফতারের পর ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন তাদের থাকা-খাওয়ার সংস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়ায় লক্ষাধিক অবৈধ অভিবাসীকে মুক্তির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তাবটি সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলেও পদস্থ কর্মকর্তাগণের উদ্ধৃতি দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট উল্লেখ করেছে।
প্রসঙ্গত, সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশসমূহ থেকে লাখ লাখ মানুষের মিছিলে বেশ কিছু বাংলাদেশিও ঢুকে পড়েছে। এরমধ্যে অনেকেই সীমান্তে গ্রেফতারের সময়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। অনেকে প্যারলে মুক্তিলাভে সক্ষম হলেও অধিকাংশই ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছেন। তাদেরকেই সহজশর্তে মুক্তির প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য যে, সীমান্ত অরক্ষিত থাকায় বাইডেনের আমলে প্রতিদিন অবাধে হাজার হাজার বিদেশি ঢুকে পড়ছে এবং এর ফলে সামাজিক অস্থিরতা বিরাজ করছে বলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন। সেই কারণেই বাইডেন প্রশাসন বাজেটে সীমান্তে আরো রক্ষী নিয়োগের অভিপ্রায়ে বাজেট প্রস্তাব করেছিলো। এই বাজেট পাশ হলে সামনের নির্বাচনে বাইডেনের জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে বলে মনে করে ট্রাম্প তার রিপাবলিকান সিনেটর-কংগ্রেসম্যানদের বারণ করেন। ফলে বাজেট থেকে ওই প্রসঙ্গটি বাদ দিতে বাধ্য হয়েছেন ডেমক্র্যাটরা। কারণ রিপাবলিকানদের সাপোর্ট ছাড়া কংগ্রেসে কোনও বিলই পাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে বিদ্যমান বাজেটে এ খাতে ৭০০ মিলিয়ন ডলারের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতেই ডিটেনশন সেন্টার খালি করার বিকল্প পাচ্ছে না বাইডেন প্রশাসন।
অপরদিকে, অর্থনীতি বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন যে- বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর অন্তত ৩৫ লাখ বিদেশীকে ওয়ার্ক পারমিট প্রদান করা হয় গত বছর। এরা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। কর্মক্ষম এই মানুষেরা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা চাঙ্গা রেখেছে বলেই এ বছর বড় ধরনের একটি মন্দার ধাক্কা থেকে রক্ষা পেল আমেরিকা। যার সুফল পাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির জের নভেম্বরের ব্যালট যুদ্ধেও প্রভাব ফেলকে বলে প্রধান প্রধান গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ