মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জ্যঁ-পিয়েরে।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, গত বছর আগস্ট থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত পারকিনসনসের চিকিৎসা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসক অন্তত আটবার হোয়াইট হাউসে গিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের দর্শনার্থী বইয়ে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো। এরপরই বাইডেনের পারকিনসনসে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গত ২৭ জুন প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে বাইডেনের দুর্বল উপস্থাপনের পর তার বয়স নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা-বিতর্ক । ডেমোক্রেটিক পার্টির একের পর এক নেতা প্রকাশ্যে বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড় থেকে সরে যেতে বলছেন। নিউইয়র্ক পোস্টের এই খবর বাইডেনের বয়স নিয়ে আলোচনাকে আরও উসকে দিয়েছে।
এ নিয়ে সোমবার হোয়াইট হাউসে এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, “প্রেসিডেন্টের কি পারকিনসনসের চিকিৎসা হয়েছে? না। প্রেসিডেন্ট কি পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন? না, তিনি নিচ্ছেন না। তিনি কি পারকিনসনসের জন্য কোনও ওষুধ খাচ্ছেন? না।।”
ট্রাম্পের বিপক্ষে প্রথম বিতর্কে কথা বলার সময় বারবার বাইডেন আটকে গেছেন, তাকে তোতলাতে দেখা গেছে, তাকে দুর্বল মনে হয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কথা শেষ করতে পারেননি তিনি।
তারপর থেকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেনকে তার বয়স ও দেশ পরিচালনায় সক্ষমতা নিয়ে তীব্র প্রশ্নবাণের মোকাবিলা করে যেতে হচ্ছে। তিনি নিজেও তার বয়স হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন। তবে আগামী আরও চার বছর তার দেশ পরিচালনায় কোনও অসুবিধা হবে না বলেও তিনি বারবার বোঝাতে চাইছেন।
আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, হোয়াইট হাউসের দর্শনার্থী বই পরীক্ষা করে দেখা গেছে- ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারের স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ এবং চলাফেরায় অসুবিধার কারণে শারীরিক সমস্যা বিষয়ক চিকিৎসক ডা. কেভিন ক্যানার্ড গত আগস্ট থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত আটবার হোয়াইট হাউসে গিয়েছেন।
সময়ের আগেই পারকিনসনসে আক্রান্ত হলে তার কী চিকিৎসা হবে, তা নিয়ে ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের এক গবেষণায় সহগবেষক ছিলেন ডা. ক্যানার্ড।
দর্শনার্থী বই অনুযায়ী, ক্যানার্ড হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক ডা. কেভিন ও’কনরের সঙ্গে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি দেখা করেছেন।
জ্যঁ-পিয়েরে অবশ্য ডা. ক্যানার্ডের হোয়াইট হাউসে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করতে এবং এ বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকেরা বারবার জ্যঁ-পিয়েরেকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। জবাবে তিনি নিরাপত্তার খাতিরে সবার গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানাতে বলেছেন।
জ্যঁ-পিয়েরে বলেছেন, প্রতিবছর বাইডেনের যে শারীরিক পরীক্ষা হয়, তার অংশ হিসেবে একজন স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ তিনবার বাইডেনকে পরীক্ষা করেছেন। ডা. ক্যানার্ডের হোয়াইট হাউসে যাওয়া নিয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে বলেছেন, “হাজারো সেনা কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসে আসেন। তাদের মেডিকেল ইউনিটের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়।” সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ
