ইসরায়েল লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব দিয়ে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে একটি নথি হস্তান্তর করেছে। এই প্রস্তাবে কূটনৈতিক সমাধানের কথা বলা হলেও ইসরায়েল স্পষ্ট শর্ত দিয়েছে, যাতে তাদের সেনাবাহিনী (আইডিএফ) লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে মুক্তভাবে অভিযান চালাতে পারে। ইসরায়েল চায়, হিজবুল্লাহ যেন সংগঠিত হয়ে সীমান্তে সামরিক স্থাপনা গড়তে না পারে এবং লেবাননের আকাশসীমায় ইসরায়েলের বিমানবাহিনী স্বাধীনভাবে অভিযান চালাতে পারে।
যদিও এই শর্তের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি, তবে সংশ্লিষ্ট একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের এ ধরনের শর্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। একইভাবে, লেবাননের পক্ষ থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। হিজবুল্লাহর নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ার পর এ প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত হয়েছে। হোয়াইট হাউসের বিশেষ দূত আমোস হোচস্টেইন এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সোমবার বৈরুত সফরে যাচ্ছেন। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা করতে মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি ও পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরির সঙ্গে হোচস্টেইনের আলোচনা হবে। বেরি বলেছেন, এটি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার শেষ সুযোগ হতে পারে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন যে, ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া চুক্তি থেকে বিচ্যুতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।
এরই মধ্যে ইসরায়েলের হামলা লেবাননের বৈরুত ও গাজায় চলমান রয়েছে। সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ও বৈরুতের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে স্কুল ও আশ্রয়কেন্দ্রও রয়েছে। গাজার জাবালিয়ার বাসিন্দারা এবং ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের চিকিৎসকদের মতে, ইসরায়েলি সেনারা একটি স্কুলে হামলা করে, লোকজনকে আটক করে এবং স্কুলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
লেবাননের সাধারণ জনগণ শান্তি আলোচনার বিষয়ে খুব একটা আশাবাদী নয়। বৈরুতের এক গাড়ির ওয়ার্কশপ মালিক, ৬১ বছর বয়সী টনি রাওয়ানদোস বলেন, "এটা শুধুই সময়ের অপচয়। হিজবুল্লাহর অস্ত্র থেকে কি আমরা মুক্তি পাব? হোচেস্টেইন কোনো পরিবর্তন আনতে পারবেন না।"
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল