কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন স্থান পাহেলগাঁওয়ের বৈসারানে ভয়াবহ অস্ত্রধারী হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। হামলায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’, যা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি উপশাখা হিসেবে পরিচিত।
ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হামলায় জড়িত তিন অস্ত্রধারীর নাম প্রকাশ করেছে। তারা হলো—আসিফ ফুজি, সুলেমান শাহ এবং আবু তালহা। তাদের ছবি ও স্কেচও প্রকাশ করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পুরো হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন শীর্ষ লস্কর কমান্ডার সাইফুল্লাহ কাসুরি ওরফে খালিদ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হামলাকারীরা সৈন্যদের মতো ছদ্মবেশে—ক্যামোফ্লেজ পোশাক ও পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে—বৈসারানের চারপাশের ঘন বন থেকে এসে পর্যটকদের ওপর একেবারে কাছ থেকে গুলি চালায়। তারা অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং উন্নত যোগাযোগ যন্ত্র ব্যবহার করেছে।
হামলাকারীরা নিজেদের গতিবিধি ক্যামেরায় ধারণ করতেও হেলমেট-ক্যামে ও বডি-ক্যামে ভিডিও ধারণ করছিল। হামলার আগে তারা আশপাশে এলাকায় স্থানীয়দের সাহায্যে কয়েকদিন ধরে নজরদারি চালিয়েছে। তাদের ব্যাগে শুকনো খাবার ও ওষুধও মজুত ছিল, যা দীর্ঘমেয়াদি অভিযানের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়।
হামলার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুইজন হামলাকারী পশতু ভাষায় কথা বলছিলেন—যা থেকে ধরে নেওয়া যায় তারা পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশ করেছে। বাকি দুই হামলাকারী ছিলেন কাশ্মীরের স্থানীয়, একজন বিজবেহারা ও অন্যজন ত্রালের বাসিন্দা।
গোয়েন্দা রিপোর্টে আরও জানা গেছে, হামলাকারীদের ডিজিটাল চিহ্ন মুজাফফরাবাদ ও করাচির কিছু নিরাপদ ঘাঁটিতে পাওয়া গেছে, যা সীমান্তের ওপারে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ।
ঘটনার পরপরই এলাকা ঘিরে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হচ্ছে বনভূমিতে পালিয়ে থাকা হামলাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল