গাজায় এতো ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে হামাসের জনপ্রিয়তা একটুও কমাতে পারেনি ইসরায়েল। উল্টো স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি অবরুদ্ধ উপত্যকার মানুষের মধ্যে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে উঠে এসেছে সেই তথ্য।
মিডলইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনিদের একটি বিশাল অংশ হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা করেছেন। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ করতে পারবে, এমনটাও মনে করছেন না। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে গত দুই বছরে হামাসের সমর্থন বেড়েছে অনেক গুণে। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহর প্রতি অসন্তোষও গভীর হয়েছে।
প্যালেস্টিনিয়ান সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সার্ভে রিসার্চ (পিসিপিএসআর) কর্তৃক ২২-২৫ অক্টোবর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিম তীর ও গাজা জুড়ে প্রায় ৭০ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের নিরস্ত্রীকরণের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। এমনকি যদি এর ফলস্বরূপ ইসরায়েলি হামলা পুনরায় শুরু হয় তবুও তারা হামাসের পক্ষে থাকবেন বলে জানিয়েছেন।
বিশেষত পশ্চিম তীরে এই বিরোধিতা সবচেয়ে শক্তিশালী। যেখানে প্রায় ৮০ শতাংশ উত্তরদাতা চান যে হামাস তাদের অস্ত্র ধরে রাখুক। এই অঞ্চলটি হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী ফাতাহর নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ) শাসন করে। অন্যদিকে গাজায় ৫৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি হামাসের নিরস্ত্রীকরণের বিরোধিতা করেছেন।
জরিপটিতে ১২শ' মানুষের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ফিলিস্তিনিদের ৬২ শতাংশ মনে করেন ট্রাম্পের পরিকল্পনা যুদ্ধ একবারে স্থায়ী হবে না। পশ্চিম তীরে এই হতাশা আরও বেশি। যেখানে ৬৭ শতাংশ উত্তরদাতা পরিকল্পনার সাফল্য নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। গাজায় এই হার ৫৪ শতাংশ।
৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাস-নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলি অভিযানটি সঠিক ছিল কিনা জানতে চাওয়া হলে এখন ৫৩ শতাংশ ফিলিস্তিনি মনে করেন এটি সঠিক ছিল। পশ্চিম তীরে ৫৯ শতাংশ এবং গাজায় ৪৪ শতাংশ উত্তরদাতা এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
জরিপ অনুযায়ী, হামাস ফাতাহর চেয়ে অনেক জনপ্রিয়। সমগ্র ফিলিস্তিনিদের ৩৫ শতাংশ হামাসকে সমর্থন করেন, যেখানে ফাতাহর পক্ষে রয়েছেন ২৪ শতাংশ। ৩২ শতাংশ উত্তরদাতা হয় কোনো দলকেই সমর্থন করেন না অথবা কোনো মতামত নেই।
ফিলিস্তিনিদের মধ্যে মাত্র ২৩ শতাংশ প্রবীণ প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রতি সন্তুষ্ট। ৮৫ শতাংশ চান তিনি পদত্যাগ করুন। অন্যদিকে, কারাবন্দী ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারঘুতির প্রতি অনেকেই আস্থা রাখছেন। তিনি আব্বাস বা হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা খালেদ মেশালের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হবেন বলেই মনে করেন অনেকে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল