মমি মানেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে মলিন হয়ে যাওয়া সাদা কাপড়ে জড়ান মৃতদেহ। যা হাজার হাজার বছর আগের। এরমধ্যে শত শত মমিও আবিষ্কার হয়েছে। কিন্তু এবার অদ্ভুদ এক মমির খোঁজ মিলেছে। মাটি দিয়ে আপাদমস্তক প্রলেপ দেওয়া এক মমি। গবেষকরা বলেছেন, সম্ভবত ওই মমি কোনো দরিদ্র মানুষের। গবেষকদের ভাবতে বাধ্য করেছে তাতে যারা রাজপরিবারের অংশ ছিলেন না তাদের দেহ কীভাবে মমি করা হতো।
১২০০ খ্রীস্ট পূর্বাব্দের একটি মমি সম্প্রতি আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। সেই মমির দেহ কাদা মাটি দিয়ে লেপা ছিল। দেহে মাটির একধিক স্তর ও পরত ছিল। মিশরীয়রা এভাবে কোনো মমি বানিয়েছে তা আগে কখনো প্রকাশ পায়নি। এই প্রযুক্তির ব্যবহার এই প্রথম। মিসরের প্রত্নতত্ত্বের ইতিহাসে এমন উদাহরণ নেই যে কোনো দেহ মমি করতে বা ক্ষতি মেরামত করতে কাদা মাটি কাজে লেগেছে। যে মমিটি মাটির প্রলেপের মধ্যে উদ্ধার হয়েছে তা থেকে অনেক তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এর পায়ে ২.৫ সেন্টিমিটার পুরু কাদা মাটি লাগানো হয়েছিল। মুখের মাটির প্রলেপ ছিল ১.৫ সেন্টিমিটার। ওই মাটির রাসায়নিক পরীক্ষা করে জানা গেছে, মাটি দিয়ে মমির মাথা মোড়া হয়েছিল সেটি সম্ভবত সাদা লাইমস্টোন উপাদান দিয়ে তৈরি। তার উপরে লাল ধাতব রং করা হয়েছে। মমির পায়ে কিছু অংশ ভেঙে গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে যারা সমাধি লুট করে তাদের হাত সম্ভবত পড়েছিল এই মমির উপর। মৃতদেহটি যেভাবে মেরামত করা হয়েছে তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে মৃত ব্যক্তি পরবর্তী জীবনে বিদ্যমান থাকতে পারে। গবেষকরা বলেছেন, সম্ভবত ওই মমি কোনো দরিদ্র মানুষের। রাজ পরিবারের সদস্যরা মমিতে দামি রজন লেপন করত।
সিডনির ম্যাককয়েরি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ করিন সোয়াদা বলেছেন, ‘মিসরীয় সমাজের বেশিরভাগই ছিল রাজার কাছাকাছি।’ তাই রাজকীয় পদ্ধতি অনুকরণ করত তারা। কিন্তু কাদা মাটির প্রলেপ দেওয়া এই মমির পরিচয় এবং সামাজিক অবস্থান এখনো জানা যায়নি।এটি একটি রহস্য রয়ে গেছে। তবে মিসর থেকে যদি আরও রাজকীয় নয় এমন মমি পাওয়া যায় তবে জানা যাবে তারা সেগুলো ব্যবহার করত এবং কেন।