বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

আফগানিস্তান নিয়ে কোন দেশ কী ভাবছে

গোটা বিশ্বের চোখ এখন আফগানিস্তানের ওপর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন মাস দুয়েক আগে আফগানিস্তান থেকে তার সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কিন্তু মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শেষ না হওয়ার আগেই আফগানিস্তান দখল করে নিয়েছে তালেবান। শিগগিরই তারা সরকার গঠন করবে তা নিশ্চিত। এই অবস্থায় বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো ধীরে ধীরে তাদের মনোভাব ব্যক্ত করছে। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

তুরস্ক সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলছে : তুরস্ক বলেছে আফগান সংঘাতে সংশ্লিষ্ট ‘সব পক্ষের’ সঙ্গে তারা কথা বলছে, যার মধ্যে তালেবানও রয়েছে। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুৎ কাভুসগলু বলেন আফগানিস্তানে কূটনৈতিক মিশন এবং সেখানে তুরস্কের নাগরিকদের ব্যাপারে তালেবানের বার্তাকে তুরস্ক স্বাগত জানিয়েছে। ‘আমরা আশা করছি তারা যা বলেছে তা কাজেও করবে’। এর আগে, তুরস্ক বলেছিল ন্যাটো বাহিনীর সদস্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার পর সেদেশের বিমানবন্দরের প্রহরা ও কার্যক্রম চালু রাখতে তাদের ৬০০ সৈন্য আফগানিস্তানে থেকে যাবে। কিন্তু এখন তালেবান ক্ষমতা হাতে নেওয়ার পর সেটা হবে কি না তা স্পষ্ট নয়।

রাশিয়ার গণমাধ্যমে মার্কিন সমালোচনা : তালেবান আফগানিস্তান দখলের লড়াইয়ে তাদের বিজয় ঘোষণার দুই দিন পর সেখানে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমেরিকাকে দায়ী করে তীব্র সমালোচনা প্রকাশিত হয়েছে রাশিয়ায় গতকাল সংবাদপত্রগুলোতে। সরকারি সংবাদপত্র রসিইসকায়া গেজেটায় পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক বিশ্লেষক ফিয়োদোর লুকিয়ানফ দেশটির ঘটনাবলিকে একটা ‘চরম বিশৃঙ্খলা’ বলে বর্ণনা করেছেন। ‘আমেরিকার মদদপুষ্ট প্রশাসন তাসের ঘরের মতো   ভেঙে পড়েছে,’ তিনি বলেছেন। ‘আমেরিকানরা ঘরে ফেরেনি, তারা পালিয়েছে।’

ইরান কাবুলে দূতাবাস খোলা রেখেছে : ইরান জানাচ্ছে কাবুলে তাদের দূতাবাস এখনো খোলা আছে। ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে আফগানিস্তানে তাদের দূতাবাস ‘সম্পূর্ণ খোলা এবং পুরো মাত্রায় কাজ করছে’। আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সাঈদ খাতিবজাদের আগে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এই খবর নাকচ করে দেন যে, আফগানিস্তানে শুধু রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তানের দূতাবাস খোলা রয়েছে। তিনি আরও    বলেন, শুধু কাবুলেই নয়, হেরাতেও ইরানি কনস্যুলেট ‘পুরোপুরি কাজ করছে’।

সবাইকে সাহায্য করতে পারছে না অস্ট্রেলিয়া : অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, যে আফগানরা অস্ট্রেলিয়ার সৈনিকদের সহায়তা করেছে, তাদের সবাইকে সাহায্য করতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীতে ২০০২ সাল থেকে এই বছরের জুন পর্যন্ত অংশ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, যেখানে দেশটির ৪১ জন সৈনিক নিহত হয়েছে।

সিদ্ধান্ত নিতে অপেক্ষা করতে চায় পাকিস্তান : পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ট্রিবিউনে প্রকাশিত একটি খবরে বলা হচ্ছে যে, দেশটির বেসামরিক এবং সামরিক নেতারা আফগানিস্তান বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আরও অপেক্ষা করতে চান। একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ওই পত্রিকায় বলা হচ্ছে, কাবুলের নতুন সরকারকে স্বীকৃতির বিষয়ে   এখনই কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় না পাকিস্তান। এ বিষয়ে তাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটা ঠিক করতে তারা চীন, রাশিয়া, ইরানের মতো দেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে বলেও জানানো হয়েছে।

ভারতীয় কূটনীতিকদের নিয়ে কাবুল থেকে গুজরাট : আফগানিস্তানে ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে চিন্তায় পড়েছে মোদী সরকার। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া খবরে দেখা যাচ্ছে, কাবুল থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এবং অন্য কূটনৈতিক কর্মীদের নিয়ে একটি বিমান পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে অবতরণ করেছে।

কয়েক ঘণ্টা আগে কাবুল থেকে ভারতীয় ওই বিমানটি যাত্রা শুরু করেছিল। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি এর আগে বলেছিলেন, কাবুল থেকে রাষ্ট্রদূত ও কর্মীদের অতিসত্বর ভারতে নিয়ে আসা হবে।

সর্বশেষ খবর