সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কাবুলে নারী অধিকারের বিক্ষোভে তালেবানের আঘাত

“তারা বন্দুকের ম্যাগাজিন দিয়ে মহিলাদের মাথায় আঘাত করেন এবং অনেকে রক্তাক্ত হন”

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নারীদের অধিকার আদায়ের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে তালেবান। গতকাল বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বিক্ষোভকারী নারীদের ভাষ্য, অধিকার আদায়ের দাবিতে তারা কাবুলে একটি বিক্ষোভ বের করেন। তারা একটি ব্রিজ থেকে হেঁটে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ও পিপার স্প্রে করে তালেবান। ঠিক তিন সপ্তাহ আগে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়। তারপর থেকে রাজধানী কাবুলসহ দেশটির একাধিক স্থানে বিক্ষোভ করেছেন নারীরা। হেরাতেও নারীরা বিক্ষোভ করেছেন। আফগান নারীরা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার অধিকার দাবি করছেন। পাশাপাশি নতুন সরকারে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ছিল তালেবান। সে সময় নারী অধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটে। শিক্ষাসহ বিভিন্ন মৌলিক ও মানবিক অধিকার থেকে নারীদের বঞ্চিত করে তালেবান। তালেবান আবার আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করায় নারীরা তাদের অধিকারের বিষয়ে শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন।

তালেবান অবশ্য বলেছে, নারীরা সরকারে যোগ দিতে পারবে, কিন্তু মন্ত্রীর পদে থাকতে পারবে না। অনেক নারী ভয় পাচ্ছেন যে, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালে তালেবান ক্ষমতায় থাকার সময়ে নারীদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছিল, সেই একই আচরণ আবারো করা হবে কি না। নারীদের বাইরে বের হতে হলে মুখ ঢেকে রাখতে হতো এবং ছোটখাটো অপরাধের জন্যও কঠোর শাস্তি দেওয়া হতো। সাংবাদিক আজিতা নাজিমি আফগান টেলিভিশন তোলোকে বলেন, ‘২৫ বছর আগে, যখন তালেবান এসেছিল, তারা আমাকে স্কুলে যেতে বাধা দিয়েছিল। তাদের শাসনের পাঁচ বছর পর, আমি ২৫ বছর পড়াশোনা করেছি এবং কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমাদের উন্নত ভবিষ্যতের জন্য হলেও, আমরা এটি হতে দেব না।’ আরেকজন বিক্ষোভকারী সোরায়া রয়টার্সকে বলেন, ‘তারা বন্দুকের ম্যাগাজিন দিয়ে মহিলাদের মাথায় আঘাত করে এবং অনেকেই রক্তাক্ত হন।’ তালেবান সদস্যরা বিক্ষোভকারী নারীদের মাথায় বন্দুক দিয়ে আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ করেন সোরায়া নামের এক নারী। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, তালেবানের হামলায় অনেক নারী রক্তাক্ত হন। স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমের প্রকাশক জাকি দারইয়াবি জখম মহিলার ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন। ওই মহিলার নাম রাবিয়া সাদাত। তার কপাল ফেটে রক্ত পড়ছে। অন্য ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, তালেবান নিরাপত্তারক্ষীরা নারীদের আটকানোর চেষ্টা করছে। এদিকে, নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে কোনো আপস করা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তালেবান নেতারা।

শুক্রবার এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার তালেবান নেতা সোহেল শাহিন। তিনি জানান, নারী অধিকার নিয়ে আমেরিকার জ্ঞান দেওয়ার দরকার নেই। হিজাব ছাড়া মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া পাশ্চাত্য সংস্কৃতি। আমাদের সংস্কৃতি এ কাজ কখনো সমর্থন করে না। তিনি আরও জানিয়েছেন, হিজাব পরে কর্মক্ষেত্রে গেলে কাউকে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

সর্বশেষ খবর