সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জলবায়ু চুক্তির বিরোধিতায় এককাট্টা ভারত-চীন

জলবায়ু চুক্তির বিরোধিতায় এককাট্টা ভারত-চীন

এই প্রথম বিশ্ব মঞ্চে চীন ও ভারতের একসুর শোনা গেল। সম্প্রতি প্রকাশিত গ্লাসগো জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের  খসড়া চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করেছে এই দুই দেশ। এরই সঙ্গে যোগ দিয়েছে আরও ২০টি দেশ। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, সম্মেলনের ঘোষণা চূড়ান্ত হওয়ার পথে এখন সবচেয়ে বড় বাধা ভারত। কয়লা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমানোর প্রস্তাবে নিজের অমতের কথা জানিয়েছে কয়লার ওপর অতিনির্ভর ভারত। তার সঙ্গে আপত্তি জানিয়েছে চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া ও ইরান। আর এই দেশগুলোর বিরোধিতার কারণে সম্মেলনের শেষ মুহূর্তে কয়লার ব্যবহার ‘বন্ধের’ পরিবর্তে চুক্তিতে লেখা হয়েছে কয়লার ব্যবহার ‘কমানো’ হবে। ভারতসহ এই দেশগুলোর অভিযোগ বিশ্বের উন্নত দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বড় দায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর চাপাতে চাইছে। এই দেশগুলো নিজেদের লাইক মাইন্ডেড ডেভেলপিং কান্ট্রিস বলে চিহ্নিত করেছে ও এই গ্রুপে নতুন করে যোগ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা, ইরান, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়া। এই চুক্তিতে দূষণ নির্গমন হ্রাসের বিষয়ে যে সব কারণ ও লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল বিশ্বকে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ করা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই লক্ষ্য সফল হলে জলবায়ুর সবচেয়ে খারাপ প্রভাবগুলো এড়ানো যেতে পারে। তবে এই সম্মেলনে দেশগুলোর বিরোধের মূল বিষয় হল, ২০২২ সালের শেষ নাগাদ কপ-২৭-এর জন্য তাদের নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো। স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত দুই সপ্তাহব্যাপী এই আলোচনায় অংশ নেয় ২০০টিরও বেশি দেশ, এনজিওসহ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। 

সম্মেলনটির চেয়ারম্যান অলোক শর্মা জানিয়েছেন, গ্লাসগোতে উপস্থিত প্রায় ২০০টি জাতীয় প্রতিনিধিদলের কেউই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে কয়লা, তেল ও গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেননি। এদিকে খসড়া চুক্তির একটি অনুচ্ছেদ নিয়ে আপত্তি তুলে ভারতের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেন, জ্বালানির উৎস নিয়ে পরামর্শ দেওয়া জাতিসংঘের কাজ নয়। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কার্বন বরাদ্দের ন্যায্য ভাগ দাবি করে। এই দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানির দায়িত্বশীল ব্যবহারে আগ্রহী। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন নির্গমনকারী দেশ চীন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার জন্য ২০৬০ সালকে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। সম্মেলনে যোগ দিলেও এ বিষয়ে চীন নতুন আর কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি বলে জানা গেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় কয়লা উৎপাদনকারী এই দেশটিতে জ্বালানির প্রধান উৎসও এই কয়লা।

সর্বশেষ খবর