বৃহস্পতিবার, ৪ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
রাশিয়া ইউক্রেন পরিস্থিতি

যুদ্ধবিরতির আশা দেখছেন শ্রোয়েডার

যুদ্ধবিরতির আশা দেখছেন শ্রোয়েডার

অবশেষে কেউ বললেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শেষ হতে চলেছে। আর তিনি হলেন জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর গেরহার্ড শ্রোয়েডার। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেও পরিচিত তিনি। মূলত এ আশা করছেন ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর থেকে রাশিয়ার অবরোধ তুলে নেওয়া নিয়ে। এ জন্য দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এ পদক্ষেপ প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলা সংঘাতকে যুদ্ধিবিরতির দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

গতকাল লুক্সেমবার্গভিত্তিক টেলিভিশন আরটিএলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শ্রোয়েডার এসব কথা বলেছেন। আলজাজিরা জানায়, সাক্ষাৎকারে বলা হয়েছে, তিনি দিন কয়েক আগে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। গেরহার্ড শ্রোয়েডার বলেছেন, ক্রেমলিন সমঝোতার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান চায়, এটা একটা সুখবর। এ ক্ষেত্রে শস্য রপ্তানি চুক্তি প্রাথমিক সফলতা। হয়তো শিগগিরই এটি যুদ্ধবিরতিতে গড়াতে পারে। গত সোমবার ইউক্রেনের ওদেসাবন্দর থেকে ২৬ হাজার টন শস্যভর্তি প্রথম জাহাজটি লেবাননের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ওই দিন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজোনি নামে সিয়েরা লিওনের পতাকাবাহী জাহাজটি রওনা করে। মঙ্গলবার জাহাজটি ইস্তাম্বুলে পৌঁছায়। গতকাল সেখানে তুরস্ক, ইউক্রেন, রাশিয়া ও জাতিসংঘের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট কন্ট্রোল সেন্টারের (জেসিসি) কমকর্তারা জাহাজের পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। এটা শেষ হওয়ার পর জাহাজটি লেবাননের ত্রিপোলি বন্দরের উদ্দেশে ইস্তাম্বুল ত্যাগ করবে। সাক্ষাৎকারে শ্রোয়েডার আরও বলেছেন, ক্রিমিয়া সংকটের মতো বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। সেটা হতে হংকংয়ের মতো ৯৯ বছরের বেশি লাগার কথা নয়। কিন্তু পরবর্তী প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করতে পারবে।

১৯৯৮ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জার্মান চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করেছেন গেরহার্ড শ্রোয়েডার। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের সমালোচনা করলেও পুতিনের নিন্দা জানাতে রাজি নন তিনি।

উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে কথিত বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এ অভিযানকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠজনদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। যুদ্ধবিরতির জন্য ‘সুইস ক্যানোতাল মডেল’ একটা ভালো সমাধান হতে পারে বলে মনে করেন সাবেক এ জার্মান চ্যান্সেলর। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য পুতিন যুদ্ধপূর্ব সমঝোতার ক্ষেত্রে ফিরে যাবেন কি না, তা দেখতে হবে।

রাশিয়ার তেল বাদ দিতে পারছে না ইউরোপ : রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের সঙ্গে আছে পশ্চিমারা। দিয়েছে রাশিয়ার জ্বালানি তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা। আর তাতেই হয়েছে উল্টো-বিপদ। এখন ইউরোপে জ্বালানি সংকট হয়েছে তীব্র। ফলে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কম হওয়া তো দূরের কথা; বেড়েছে মস্কোর কাছ থেকে ডিজেল আমদানি।

গত মাসে ইউরোপের দেশগুলোর রাশিয়ান উৎসের ডিজেল আমদানি ১৩ শতাংশ বেড়েছে (মাসিক হিসাবে)। জ্বালানি পণ্যের লেনদেন অনুসরণকারী সংস্থা-ভরটেক্সা মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, জুলাইয়ে ইউরোপ বিপুল রাশিয়ান ডিজেল আমদানি করে। এমনকি তাদের রাশিয়ান ডিজেল আমদানি অন্য উৎসের ডিজেল আমদানির চেয়ে বেশি হয়েছে দৈনিক প্রায় ২ লাখ ব্যারেল।  সার্বিকভাবে ২০২১ সালের জুলাইয়ের চেয়ে যা ২৩ শতাংশের মতো উচ্চহারে বেড়েছে (বার্ষিক হিসাবে)।

সর্বশেষ খবর