শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

কী হবে খেরসনে?

কী হবে খেরসনে?

ইউক্রেনের একাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে দেশটির বেশির ভাগ এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন -বিবিসি

খেরসন থেকে হাজার হাজার বেসামরিক লোক সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। খেরসনে রাশিয়ার নিয়োগকৃত কর্মকর্তা ভøাদিমির সালদো বলেছেন, দিনিপ্রো নদীর পশ্চিম তীরের চারটি শহর থেকে ৫০ থেকে ৬০ হাজার সাধারণ মানুষকে ধীরে ধীরে সরিয়ে নেওয়া হবে। তাছাড়া রাশিয়ার সব কর্মকর্তাও নদী পার হয়ে যাবেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, ইউক্রেন যে কোনো সময় আক্রমণ করতে পারে, সে কারণেই আগে থেকে খেরসন ফাঁকা করে দেওয়া হচ্ছে। খেরসনের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে নিপ্রো নদী। সেই নিপ্রো নদীর গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ পেরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে গিয়ে রাখা হচ্ছে বেসামরিক মানুষকে। ইউক্রেনের শেলে যাতে কারও ক্ষতি না হয়, সে জন্যই এ কাজ করা হচ্ছে বলে তার দাবি।

ইউক্রেনের বক্তব্য অবশ্য একেবারে উল্টো। তাদের বক্তব্য, রাশিয়া আক্রমণ শুরু করবে বলেই একাজ করা হচ্ছে। রাশিয়া খেরসন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে দুই পক্ষই বড়সড় লড়াইয়ের আশঙ্কা করছে।

বস্তুত, যে কোনো সময় ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে বলে মনে করছে রাশিয়া। রাশিয়ার গভর্নর জানিয়েছেন, বেসামরিক মানুষ সরিয়ে নিলেও রাশিয়ার সেনা লড়াই করার জন্য প্রস্তুত। লড়াই না করে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া হবে না।

রাশিয়ার দাবি, ইউক্রেন থেকে মোট ৫০ লাখ মানুষ এখন পর্যন্ত রাশিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই গেছেন রাশিয়ার দখলে থাকা চারটি অঞ্চল থেকে। খেরসন, দনেৎস্ক, লুহানস্ক এবং জাপোরিঝঝিয়ার বড় অংশ রাশিয়া নিজেদের হাতে নিয়েছিল। সেখানে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। এরপর ডিক্রি জারি করে রাশিয়া জানায়, ওই অঞ্চলগুলোকে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলো অবশ্য এর বিরোধিতা করেছে। ইউক্রেনও ওই অঞ্চলের খানিকটা এলাকা পুনর্দখল করতে পেরেছে। বুধবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী একটি বিবৃতি জারি করে বলেন, ৪ লাখ ৬ হাজার ইউক্রেনীয় এই মুহূর্তে রাশিয়ার সীমান্তের ভিতরে আছেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তারা রাশিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।

ইউক্রেনকে অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়াল ইসরায়েল : চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করতে কোনো ধরনের অস্ত্র নয় কেবল ক্ষেপণাস্ত্র সংকেত ব্যবস্থা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। যদিও রাশিয়ার হামলা মোকাবিলায় ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র সহায়তা চেয়ে আসছে ইউক্রেন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ বুধবার এ তথ্য জানান, ইউক্রেনের বাহিনীকে শক্তিশালী করতে ইসরায়েল অস্ত্র পাঠালে রাশিয়া-ইসরায়েল সম্পর্কে মারাত্মক অবনতি হবে বলে মস্কোর হুঁশিয়ারির দুই দিনের মাথায় ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এল।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকের সময় বেনি গ্যান্টজ বলেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে আমাদের নীতি পরিবর্তন হবে না। আমরা পশ্চিমাদের সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখব। আমরা অস্ত্র সরবরাহ করব না।’ ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের শুরু থেকেই ইসরায়েল মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার জন্য একটি সূক্ষ্ম কূটনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে আসছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একজন ইহুদি। রাশিয়ার পদক্ষেপের বিষয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে বিরোধিতা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য বেশ কয়েকবার ইসরায়েলের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর