মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রাশিয়ার হামলার মুখে খেরসন ছাড়ছেন ইউক্রেনীয়রা

রাশিয়ার হামলার মুখে খেরসন ছাড়ছেন ইউক্রেনীয়রা

শীতে রুশ হামলা জোরদারের শঙ্কায় খেরসন ও মাইকোলাইভ থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ। বিদ্যুৎ ও পানির তীব্র সংকটে এ সিদ্ধান্ত দেশটির। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিদ্যুতের অভাবে ও প্রচণ্ড শীতে ইউক্রেনের লাখো মানুষের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

মূলত ইউক্রেনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বড় অবকাঠামোগুলোয় ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। রাশিয়ার ক্রমাগত হামলায় ধ্বংস হওয়ায় বিদ্যুৎ ও পানির সংকটে আছে ইউক্রেনবাসী। কিন্তু বিদ্যুৎ ও পানি ছাড়া শীত পার করতে পারবে না তারা। তাই সদ্যস্বাধীন খেরসন ও মাইকোলাইভ থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার অব্যাহত গোলা হামলা থেকে বাঁচতে রবিবার কয়েক শ ইউক্রেনীয় খেরসন শহর ছেড়ে গেছেন। রাশিয়া সেনা প্রত্যাহার করে নিলে দুই সপ্তাহ আগে শহরটি পুনরায় দখলে নেয় ইউক্রেন বাহিনী। কিন্তু ইউক্রেন বলছে, কিয়েভে ফের ফিরতে পারাটা তাদের বড় অর্জন।

রুশ বাহিনী শহরটি ছেড়ে যাওয়ার আগে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ধ্বংস করে দিয়ে যায়। এর পর থেকে পানি ও বিদ্যুতের অভাবে বাসিন্দাদের সেখানে বসবাস করা কঠিন হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎ না থাকায় তীব্র শীতের মধ্যে তারা ঘর গরম করতে পারছে না।

খেরসনের আঞ্চলিক সামরিক কর্তৃপক্ষের প্রধান ইয়ারোস্লাভ ইয়ানুশেভিচ বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের সব অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাদের সবচেয়ে বড় ট্রান্সফরমার ধ্বংস হয়ে গেছে। বাসিন্দাদের আমরা সরিয়ে নিচ্ছি।’ এর আগে গত সপ্তাহে ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী জানান, নাগরিকদের সরিয়ে নিতে যানবাহনের ব্যবস্থা করবে সরকার। এর আগে অন্যান্য দেশে আশ্রয় নেওয়া ইউক্রেনীয়দের শীতে দেশে না ফেরার আহ্বানও জানানো হয়।

এদিকে রাশিয়া যদি তাদের বোমা হামলা না থামায় তবে প্রচণ্ড ঠান্ডায় লাখো ইউক্রেনীয়র জীবন সংকটে পড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এরই মধ্যে তুষারে ঢেকে গেছে রাজধানী কিয়েভ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক ড. হান্স হেনরি পি ক্লুগ বলেন, এ শীত লাখো ইউক্রেনীয়র জন্য প্রাণনাশের কারণ হতে পারে। ভয়াবহ মাত্রার জ্বালানি ও মানবিক সংকট এবং ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াজনিত বিভিন্ন কারণে সৃষ্ট রোগ ইউক্রেনীয়দের বেঁচে থাকা কঠিনতর করে তুলবে।

গত পরশু শহর ছাড়তে গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ইয়েভহেন ইয়ানকভ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছি, এটা খুবই বেদনাদায়ক। আমরা এখন মুক্ত, তার পরও চলে যেতে হচ্ছে। কারণ, হামলা হচ্ছে, গোলা এসে পড়ছে। লোকজন মারা যাচ্ছে।’

খেরসনে অব্যাহত বোমা হামলার কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। রাশিয়া নিপ্রো নদী ঘিরে নিজেদের প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান পোক্ত এবং ইউক্রেনের নতুন হামলা প্রচেষ্টা রুখে দেওয়ার চেষ্টা করছে নাকি শহরটি পুনরায় দখলের চেষ্টা করছে। খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহার ছিল মস্কোর জন্য খুবই অপমানের।

সর্বশেষ খবর