শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইউক্রেন যুদ্ধে জড়াচ্ছে বেলারুশ

দুই দেশের একসঙ্গে সামরিক মহড়া

বছর হতে চলল ইউক্রেনে-রাশিয়া যুদ্ধের। তবে এ যুদ্ধ সম্ভবত আর দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না। যুদ্ধে অংশ নিতে পারে বেলারুশও। এমনই ইঙ্গিত দিলেন রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আলেক্সে পোলিশেচুক। গতকাল তাস নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ ইঙ্গিত দেন। যদিও তার বক্তব্য, যদি ইউক্রেন বেলারুশ বা রাশিয়ার কোনো ভূখন্ড দখলের চেষ্টা করে তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে নামতে পারে বেলারুশ।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভিযান শুরু করে  রাশিয়া। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের শুরু থেকেই রাশিয়ার পক্ষে কাজ করছে বেলারুশ। অভিযানের পর থেকে দেশ দুটি একসঙ্গে কয়েকটি সামরিক মহড়া চালিয়েছে। তখন থেকে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে বেলারুশ ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। তবে বেলারুশ বলে আসছে, তারা ইউক্রেন যুদ্ধে জড়াবে না। কিন্তু লুকাশেঙ্কো রুশ বাহিনীকে ভূখন্ড ব্যবহার করে ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে আক্রমণের সুযোগ করে দেয় বেলারুশ। এর মধ্যে দুইবার বেলারুশ সফরও করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।

ইউক্রেনে হামলা চালানোর পরই বেলারুশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করে মস্কো। সম্প্রতি ফের যৌথ মহড়া দিচ্ছে দুই দেশের সেনাবাহিনী। এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, বেলারুশকে সঙ্গে নিয়ে নতুন করে আবারো হামলা চালানোর নির্দেশ দিতে পারেন প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন।

ন্যাটোর ডি ফ্যাক্টো সদস্য ইউক্রেন : বিশ্লেষকরা বলছেন যে, ন্যাটোর জন্য ইউক্রেনে হামলা চালাচ্ছে রাশিয়া। সেই ন্যাটোর মায়া ছাড়তে পারছে না ইউক্রেন। কারণ এক সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ইউক্রেন ন্যাটো ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য হতে চাওয়ার চেষ্টা করার কারণেই দেশটিতে হামলা শুরু করে রাশিয়া। গতকাল ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ বলেছেন, আদতেই তারা ন্যাটোর সদস্য না হলেও তারা ন্যাটোর সদস্য। অর্থাৎ ন্যাটো জোটের ডি ফ্যাক্টো সদস্যতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন। বিবিসিকে রেজনিকভ বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরে ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের কাছ থেকে ট্যাংক ও যুদ্ধবিমানসহ যেসব অস্ত্র চাইছে ইউক্রেন সেগুলো পাওয়া যাবে নিশ্চিত। কারণ ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয়েই আগামী দিনগুলোতে নতুন আক্রমণের পরিকল্পনা করছে। জেনিকভ বলেন, উদ্বেগ হলো পরের ধাপের উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে। আমার কাছে এটি এক ধরনের প্রটোকল। দেশ হিসেবে এবং ইউক্রেনের সশস্ত্রবাহিনী ন্যাটোর সদস্যতে পরিণত হয়েছে। ডি ফ্যাক্টো কিন্তু আইনসম্মত নয়। কারণ আমাদের অস্ত্র রয়েছে এবং কীভাবে এগুলো ব্যবহার করতে হয় তা আমাদের জানা।

রাশিয়াকে দুর্বল করতে চাওয়া পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অস্তিত্বের লড়াই হিসেবে ইউক্রেনে আক্রমণকে অভিহিত  করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। রুশ কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ইউক্রেনে তারা মূলত ন্যাটোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কারণ পশ্চিমারা দেশটিকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা  করছে। পশ্চিমারা রাশিয়ার আক্রমণকে আগ্রাসি যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করছে।

এদিকে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দ্রুত ন্যাটো জোটের সদস্য হওয়ার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। তবে এটি স্পষ্ট নয় যে, ইউক্রেনকে ন্যাটোর পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসেবে গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে কি না। যদিও রুশবিরোধী লড়াইয়ে সামরিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে জোটটি। ন্যাটো চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫ অনুসারে, জোটের যেকোনো সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণকে জোটের ওপর আক্রমণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইউক্রেন ন্যাটো জোটের ডি ফ্যাক্টো হওয়ার দাবি বিতর্কিত হবে কি না জানতে চাইলে রেজনিকভ বলেন, কেন এটি বিতর্কিত হবে? এটি সত্য, এটি      বাস্তব। আমি নিশ্চিত অদূর ভবিষ্যতে আমরা আইনসম্মত ন্যাটো সদস্য হব।

সর্বশেষ খবর