সোমবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

নতুন ‘বিশ্ব ব্যবস্থা’ গড়তে রাশিয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি

পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণ কমাতে নতুন পররাষ্ট্র নীতিতে স্বাক্ষর

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন এএনসি পার্টি জানিয়েছে, তারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের দলের সঙ্গে ‘বৈশ্বিক শৃঙ্খলার পুনর্র্নির্মাণ’ নিয়ে আলোচনা করতে সিনিয়র কর্মকর্তাদের রাশিয়ায় পাঠিয়েছে। খবর এএফপির। এনএনসির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিশনের প্রধান ওবেদ বাপেলা দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দলটি বৃহস্পতিবার মস্কো পৌঁছেছে। গতকাল পর্যন্ত তাদের থাকার কথা। দলটির কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘সফরটি রাশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টি এবং এএনসির দীর্ঘদিনের মিত্র ও বন্ধুর আমন্ত্রণে করা হয়েছে। নব্য-ঔপনিবেশিকতা এবং পূর্বে বিরাজমান ইউনিপোলার বিশ্বের পরিণতিগুলোকে বিপরীত করার জন্য বৈশ্বিক ব্যবস্থার পুনর্র্নির্মাণের বিষয়টি আলোচনায় থাকবে।’

এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, জোর প্রচার-প্রচারণা এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সুবাদে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে রাশিয়ার প্রতি সমর্থন বাড়ছে। ক্রেমলিনের চেষ্টা মোকাবিলায় পশ্চিমা শক্তিগুলোর ব্যর্থতাও এর অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। এদিকে চলতি মাসে ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর গত এক বছরে রাশিয়ার পক্ষে সার্বিকভাবে সমর্থন বেড়েছে। কারণ আগে ভূরাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষতা বজায় রাখত এমন অনেক দেশের সঙ্গেই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করেছে মস্কো। দেশগুলোর সরকারের প্রতি ক্রেমলিন দিয়েছে সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার বার্তা।  

মস্কো দীর্ঘদিন ধরেই আফ্রিকান দেশগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে। এর অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট পুতিন দুই দিন আগে পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণ কমাতে নতুন এক পররাষ্ট্র নীতিতে স্বাক্ষর করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা তার অংশের জন্য ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা করতে অস্বীকার করেছে। দেশটি বলেছে, তারা নিরপেক্ষ থাকতে চায় এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য আলোচনায় আগ্রহী। দক্ষিণ আফ্রিকা আগস্টে ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন আয়োজন করবে। এই ব্লকটি উদীয়মান অর্থনৈতিক হেভিওয়েট ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার জোট।

গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে একটি যৌথ সামরিক মহড়ার আয়োজন করেছিল, যখন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানুয়ারিতে প্রিটোরিয়ায় সরকারি সফর করেছিলেন। উল্লেখ্য, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে রাশিয়ার কয়েক দশকের সম্পর্ক রয়েছে। বর্ণবাদবিরোধী লড়াইয়ে ক্রেমলিন এএনসিকে সমর্থনের পর থেকে উভয়ের এ সম্পর্ক তৈরি হয়।

এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে নিরক্ষেপ দেশ হিসেবে পরিচয় দেওয়া দেশের সংখ্যা বাড়ছে। পশ্চিমা দুনিয়া ও রাশিয়া উভয় পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা লাভের জন্যই নিরপেক্ষ দেশের সংখ্যা বেড়েছে। পশ্চিমাদের জন্য এখানেও দুঃসংবাদ। কারণ তুরস্ক, কলম্বিয়া ও কাতারের মতো যুদ্ধের আগে পশ্চিমাঘেঁষা বলে পরিচিত ছিল এমন অনেক দেশই এখন নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। ইআইইউ তাদের প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করেছে, ‘রাশিয়া ও চীন উভয়ে মিলে কোনো রকম জোটের বাইরে থাকা ও নিরপেক্ষ দেশগুলোকে নিজেদের পক্ষে আনার যৌথ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর