বুধবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতে জাতীয় দলের তকমা হারাল তৃণমূল, এনসিপি ও সিপিআই

জাতীয় দল হতে তিনটি শর্তের অন্তত একটি পূরণ করতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে

ভারতে জাতীয় দলের তকমা হারাল তৃণমূল, এনসিপি ও সিপিআই

২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর ভারতের নির্বাচন কমিশন তৃণমূল কংগ্রেসকে জাতীয় দলের স্বীকৃতি দেয়। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সেই বছর পাঁচ রাজ্যে ছয় শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল তৃণমূল। পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের মধ্যে জিতেছিল ৩৪টিতে। সাত বছর পর সেই স্বীকৃতি হারাল মমতা ব্যানার্জির দল।

তৃণমূলের ক্ষেত্রে ঘটনাটি এমন সময় ঘটল যখন ভারতের জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে প্রভাব তৈরির চেষ্টা করছিলেন মমতা ব্যানার্জি। শুধু মমতার দলই নয়, একই সঙ্গে মহারাষ্ট্রভিত্তিক মারাঠা রাজনীতির লৌহপুরুষ খ্যাত শারদ পাওয়ারের এনসিপি (ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি) এবং বাম দল সিপিআইয়ের (কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া) সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি কেড়ে নিল নির্বাচন কমিশন। তবে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টিকে জাতীয় দল হিসেবে ঘোষণা করেছে ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী, ছয়টি জাতীয় দল বিজেপি, কংগ্রেস, আপ, সিপিএম, বিএসপি ও এনপিপি।

২০১৯-এর লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ধাক্কা খাওয়ার পর জাতীয় দলের স্বীকৃতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু সে যাত্রায় স্বীকৃতি বাতিল হয়ে যায়নি। বস্তুত স্বীকৃতি অক্ষুণ্ণ রাখতে তৃণমূল কংগ্রেস ত্রিপুরা, গোয়া, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়ের মতো রাজ্যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। তা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হলো না।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী জাতীয় দল হতে গেলে তিনটি শর্তের অন্তত একটি পূরণ করতে হয়। এক. লোকসভায় অন্তত চারটি রাজ্য থেকে ৬ শতাংশ ভোট পেতে হবে। দুই. লোকসভায় তিনটি রাজ্য থেকে অন্তত ১১টি আসন (মোট আসনের ২ শতাংশ) জিততে হবে এবং আগের জেতা আসনের অন্তত চারটি পুনরায় জিততে হবে। তিন. অন্তত চারটি রাজ্যে ‘রাজ্য দলের’ তকমা পেতে হবে। সেই শর্ত অনুযায়ী ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে দুই শতাংশের বেশি ২২ কেন্দ্রে জেতে তৃণমূল। কিন্তু শুধু বাংলায়, তিনটি রাজ্য থেকে নয়।

এ ছাড়া শর্ত অনুযায়ী তিনটি রাজ্যে লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে ছয় শতাংশ ভোট পায়নি তৃণমূল। বাংলার বাইরে শুধু মেঘালয় বিধানসভায় তাদের পাঁচ সদস্য রয়েছেন।

তালিকার রদবদলে জাতীয় রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন হবে বলে মনে করেন না তৃণমূলপন্থি পর্যবেক্ষক ভাস্কর সিংহরায়। তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘বাংলার বিধানসভা ভোটে তৃণমূল তিনটি জাতীয় দলকে হারিয়েছে। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম। আর কেন্দ্রীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে সবাই জোট বাঁধছে। এখানে জাতীয় বা রাজ্য দলের কোনো ভেদাভেদ নেই।’

নির্বাচনী রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় দলগুলো বাড়তি সুবিধা পায়। যে প্রদেশে রাজ্য দলের স্বীকৃতি নেই, সেখানে ভোটে লড়তে কমিশনের অনুমতি নিতে হবে তৃণমূল, সিপিআই ও এনসিপিকে। জাতীয় দলগুলোকে নিয়ে কমিশন বৈঠকে বসলে সেখানে ডাক পাবে না এরা।

সর্বশেষ খবর