শুক্রবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

চীনের সঙ্গে সীমান্তচুক্তি চায় ভুটান

যে দুটি দেশের সঙ্গে এখনো চীনের স্থলসীমান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি হয়নি তার একটি ভুটান, অন্যটি ভারত

ভুটানের পরিচিতি ‘হিমালয়ান নেশন’ বা ‘হিমালয়ের জাতি’ হিসেবে। দেশটির অবস্থান এশিয়ার দুই বৃহৎ দেশের মাঝখানে। এশিয়ার এ দুই বৃহত্তম শক্তিধর দেশ হলো ভারত এবং চীন। কিন্তু ভুটানের এ অনন্য ভৌগোলিক অবস্থান তাদের জন্য খুব একটা সুখকর নয়।

যে দুটি দেশের সঙ্গে চীনের এখনো সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি হয়নি তাদের মধ্যে ভুটান অন্যতম। অন্য দেশটি হচ্ছে ভারত, যাদের সঙ্গে দীর্ঘ সময় হিমালয় সীমান্তে চীনের বিরোধ রয়েছে। বিশ্বজুড়ে চীনের উত্থানের কারণে ভুটানের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে যাতে তারা চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। কিন্তু চীনের সঙ্গে চাইলেই একটি চুক্তি করা ভুটানের জন্য কঠিন। সম্ভাব্য একটি চুক্তির জন্য তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র ভারতের অনুমোদন প্রয়োজন বলে মনে করে বিবিসি। থিম্পু ও দিল্লির মধ্যে দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এ ছাড়া, ভারত থিম্পুকে কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তার প্রস্তাব দিয়ে আসছে। চীনের সঙ্গে হিমালয়ের উত্তর ও পশ্চিমের ভূখণ্ড নিয়ে ভুটানের বিরোধ রয়েছে। সব বিতর্কিত স্থানগুলোর মধ্যে মূল সমস্যা ডোকলাম নামক একটি কৌশলগত মালভূমি নিয়ে। যা ভারত, ভুটান ও চীনের সংযোগ স্থলের কাছাকাছি অবস্থিত। ভুটান এবং চীন উভয় ডোকলাম মালভূমিকে নিজেদের বলে দাবি করে এবং ভারত থিম্পুকে সমর্থন করে। ভারতের অবশ্য থিম্পুকে সমর্থন করার নিজস্ব কারণ আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডোকলাম মালভূমি নিরাপত্তার জন্য ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চীন যদি ওই অঞ্চলে কোনো ধরনের আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয় তবে তা ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। যেটা চিকেনস নেক নামে পরিচিত। এটি মূলত ২২ কিলোমিটার চওড়া একটি অঞ্চল যা ভারতের মূল ভূখণ্ডকে এর উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করেছে। সম্প্রতি ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং বেলজিয়ামের একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে তার দেশের সীমাবদ্ধতাকে তুলে ধরেছেন।

তিনি বলেন, ‘এই সমস্যার সমাধান শুধু ভুটানের একার ওপর নির্ভর করে না। আমরা তিনটি পক্ষ। সেখানে বড় দেশ বা ছোট দেশ বলে কিছু নেই, সেখানে তিনটি সমান দেশ, তিনটি সমান অংশ। ১৯৮৪ সাল থেকে দুই দেশ সীমান্ত নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে। ভুটানের ভূখণ্ডে চীন অনুপ্রবেশ করেনি বলেও মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেরিং। শেরিংয়ের এ মন্তব্য ভারতের জন্য সতর্কবার্তা বলেই মনে করছেন অনেকে। বিশেষ করে সংবাদমাধ্যমগুলো। অনেকে ভুটান ও চীনের সঙ্গে ত্রি-জংশনে কোনো অদলবদল চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সর্বশেষ খবর