বৃহস্পতিবার, ৮ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

মস্কোর বিরুদ্ধে পরিবেশ হত্যার অভিযোগ

নোভা কাখভকা বাঁধ ভেঙে কারা লাভবান

মস্কোর বিরুদ্ধে পরিবেশ হত্যার অভিযোগ

নোভা কাখভকা বাঁধ ভাঙার পর লোকালয়ে পানি ঢুকে হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে -এএফপি

এবার মস্কোর বিরুদ্ধে উঠেছে পরিবেশ হত্যার নতুন অভিযোগ। কিয়েভ বলছে, কৃত্রিম দুর্যোগ সৃষ্টির মাধ্যমে ইউক্রেনকে মানবিক বিপর্যয়ে ফেলতে চাচ্ছে মস্কো। দক্ষিণ ইউক্রেনে কাখভকা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় এ অভিযোগ করেছে বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক স্থাপনায় এমন হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল।

আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ আলেসান্দ্রা স্পাডেরো বলেন, আন্তর্জাতিক আইনে বলা আছে, যে কোনো সশস্ত্র সংঘাতে অবশ্যই বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। বাঁধে হামলা বেসামরিকদের মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলেছে। অঞ্চলটিতে মানবিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কাজেই এ হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ করা হয়, এমনকি এ পানির ওপর জাপোরিঝঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রও নির্ভরশীল। অবশ্য এ বাঁধ ভাঙার ঘটনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে ইউক্রেন আর রাশিয়া। কিন্তু বাঁধ ভেঙে দেওয়ার ফলে কোনো পক্ষ সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে? যেভাবে দুই পক্ষ একে অন্যকে বাঁধ ভাঙার জন্য দায়ী করছে, তাতে গত বছরের অমীমাংসিত নর্ডস্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইন বিস্ফোরণের ঘটনার সঙ্গে মিল পাওয়া যায়। উভয় ঘটনাতে শুরুতেই পশ্চিমাদের সন্দেহ পড়ে রাশিয়ার ওপরে। কিন্তু দুইবারেই রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া ছিল, ‘এটা আমরা করিনি। আমরা কেন এটা করব? কারণ এতে আমাদেরই ক্ষতি।’ কাখভকা বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনায় রাশিয়া দাবি করতে পারে যে, অন্তত দুইভাবে তাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়ার কারণে ভাটার দিকে খেরসন এবং নিপ্রো নদীর আশপাশের এলাকা থেকে বেসামরিক লোকজনের সঙ্গে তাদের সৈন্যদের সরিয়ে নিতে হয়েছে। বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে রাশিয়ার দখলে থাকা ক্রিমিয়ায় পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন তৈরি করবে। কারণ ওই উপদ্বীপের বাসিন্দা পরিষ্কার পানির জন্য একটি ছোট খালের ওপর নির্ভরশীল, যেটি ভেঙে যাওয়া বাঁধের কাছাকাছি রয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ঘটনাকে আরেকটি বিস্তৃতভাবে দেখা দরকার। গ্রীষ্মকালে ইউক্রেন যে পাল্টা-অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছিল এবং যা শুরু হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে, সেই দিক থেকে দেখা দরকার। ওই পাল্টা অভিযান সফল করতে হলে গত বছর পূর্ব দনবাস এলাকাকে ক্রিমিয়ার সঙ্গে যে ভূখন্ডের মাধ্যমে রাশিয়া সংযুক্ত করেছিল, সেই এলাকায় তাদের নিয়ন্ত্রণ ভাঙতে হবে।

তিন দিনে হাজারো সেনা ও ট্যাংক হারিয়েছে ইউক্রেন : ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণ ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। তিন দিনে রুশ বাহিনীর হামলায় ৩ হাজার ৭০০ সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। কোনো প্রমাণ উপস্থাপনা না করেই এমন তথ্য দেন তিনি। ইউক্রেন দাবি করে আসছে, শিগগিরই রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু করতে যাচ্ছে তারা। কিন্তু কবে, কখন অভিযান শুরু হচ্ছে এ বিষয়ে কিছু বলছে না কিয়েভ। যদিও রাশিয়া দাবি করছে, পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়েছে আর তা ব্যর্থ করে প্রচুর ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করেছে রুশ বাহিনী।

সর্বশেষ খবর