একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিনিধি পরিষদ এবং সিনেট উভয়ই স্বল্পমেয়াদি তহবিল চুক্তিতে সম্মত হওয়ায় সরকার অচল (শাটডাউন) হওয়া এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র। এই চুক্তি না হলে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ সরকারি কর্মচারীকে বিনাবেতনে ছুটিতে পাঠাতে হতো, বন্ধ হয়ে যেত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সেবা। খবর বিবিসির
বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশের ঋণের পরিমাণ শুনলে যে কারও মাথা ঘুরে যেতে পারে। পরিমাণটা ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন (৩১ হাজার ৪০০ বিলিয়ন ডলার)। এই পরিমাণ ডলারের ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার এখন এমন চরম অচলাবস্থার মধ্যে আটকে আছে, যা কেবল তাদের জন্য নয়, বিশ্ব অর্থনীতির জন্যই এক মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য ঋণের যে সর্বোচ্চ সীমা (ডেট সিলিং) বেঁধে দেওয়া আছে, সেটি আরও বাড়ানো হবে কি না- তা নিয়ে ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান- দুপক্ষই বেশির ভাগ সময় ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করে। এই অচলাবস্থা যদি ভবিষ্যতে না কাটে তাহলে এর জন্য বিশ্ব অর্থনীতিকে হয়তো সবচেয়ে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। তবে আপাতত ৪৫ দিনের জন্য এই ভয় নেই। বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন সরকারকে আগামী নভেম্বরের মধ্যভাগ পর্যন্ত অর্থায়ন সংক্রান্ত একটি বিল সিনেটে ৮৮-৯ ভোটে পাস হয়েছে।
এতে ইউক্রেনের জন্য নতুন সহায়তার পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। বিলটিকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের জন্য সহায়তা বিলটি অনুমোদন করার জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বাইডেন চান মার্কিন বাজেটে ইউক্রেনের জন্য ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক সহায়তার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে। তা করতে হলে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এখন আলাদা একটি বিল পাস করাতে হবে। এ নিয়ে আগামী সপ্তাহের শুরুর দিকে ভোট হতে পারে।
৪৫ দিনের এই পরিকল্পনা উত্থাপন করেন মার্কিন হাউস স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি। এটি পাস হওয়ায় আপাতত স্বস্তি পেল ডেমোক্র্যাট সরকার। এর আগে, নতুন অর্থায়ন বিল নিয়ে একদল কট্টর রিপাবলিকান সদস্য আপত্তি তোলায় আংশিক অচল হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছিল বাইডেন প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, শাটডাউন হলে হাজার হাজার মার্কিন ফেডারেল কর্মচারী বিনা বেতনে ছুটিতে চলে যেত। সামরিক বাহিনীতে নিযুক্তদের বেতন দিতে দেরি হতো। জরুরি বাদে সব সরকারি পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেত।
উল্লেখ্য, মার্কিন মুলুকে শাটডাউন নতুন কিছু নয়। ১৯৯৫-’৯৬ সালে বিল ক্লিনটনের জমানায় ২১ দিনের জন্য অচল হয়ে গিয়েছিল সরকার। ২০১৯ সালে সেই রেকর্ড ভেঙে যায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে। এবারও বাজেট বরাদ্দে কংগ্রেস সহমত না হলে প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মচারী বেতন পাবেন না। তাই কংগ্রেসকে এড়িয়ে তহবিল জোগাড়ে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারেন বাইডেন বলেও মনে করছেন অনেকে।