ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে দিল্লির লালকেল্লায় অনুপ্রবেশ ইস্যুতে কঠোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদি। মোদি বলেন, ‘কোনো রাষ্ট্রই অনুপ্রবেশকারীদের সহ্য করতে পারে না।’ তিনি উল্লেখ করেন, ‘অনুপ্রবেশের কারণে জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জনসংখ্যাতাত্ত্বিক মিশন (ডেমোগ্রাফিক মিশন) গঠন করবে।’
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গতকাল গোটা ভারতে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কুচকাওয়াজে অংশ নিতে এদিন সকালে দিল্লির লালকেল্লায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে রাজঘাটে দেশটির জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তিনি। সেখান থেকে আসেন লালকেল্লায়। সেখানে সেনাবাহিনীর তরফে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীকে। এর পরই লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। লালকেল্লার অনুষ্ঠানে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে পুষ্প বর্ষণ করা হয়। সেই সঙ্গে বেজে ওঠে দেশটির জাতীয় সংগীত।
লালকেল্লার মঞ্চ থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মোদি বলেন, ‘আমি গোটা দেশকে এমন একটি উদ্বেগ সম্পর্কে সতর্ক করতে চাই, যেটা একটি সংকট হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। একটা পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশের জনসংখ্যা পরিবর্তন করা হচ্ছে। এভাবে একটা নতুন সংকটের বীজ বপন করা হচ্ছে। এ অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের যুবসমাজের রুটি-রোজকার কেড়ে নিচ্ছে। এরা আমাদের দেশের কন্যা-বোনদের টার্গেট করছে। এটা আর কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।’ ভারতের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বাধীনতা দিবসে এই প্রথম ১০৩ মিনিট দীর্ঘ বক্তৃতা দিয়েছেন মোদি।
এর আগে ৭৮তম স্বাধীনতা দিবসে ৯৮ মিনিট বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। এ দিনের লালকেল্লার মঞ্চ থেকে ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসার পাশাপাশি পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়ে মোদি বলেন, ‘ভারত পারমাণবিক ব্ল্যাকমেলের কাছে কখনোই নতি স্বীকার করবে না।’ লালকেল্লার মঞ্চ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ভারতের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ নিয়ে মোদি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ভারত সরকার তার কৃষকের স্বার্থের সঙ্গে কখনো আপস করবে না। কারণ তারা দেশ ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ’ করেছে।
দিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দপ্তর ২৪ আকবর রোডে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন করা হয়। পতাকা উত্তোলনে অংশ নেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, তরুণ গগৈ প্রমুখ।
কলকাতার রেড রোডেও স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজে অংশ নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এ অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি বেশ কিছু সরকারি সংস্থা, স্কুলের পক্ষ থেকে সুসজ্জিত ট্যাবলো, শারীরিক কসরত প্রদর্শিত হয়।