সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। এর ফলে আগামী সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে তার নির্ধারিত সফরে আর কোনো বাধা থাকছে না। বৃহস্পতিবার শারার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের ১৪ দেশ। কেবল চীন ভোটদানে বিরত ছিল।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বেই বিদ্রোহী যোদ্ধারা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটায়। এরপর আহমেদ আল-শারা সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মাইক ওয়াল্টজ বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছে, যাতে সিরিয়ায় আসাদের শাসনের অবসান ঘটে নতুন যুগের সূচনা হওয়ার স্বীকৃতি আছে। শারা মূলত ইসলামপন্থি সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। কারণ শারার এ সংগঠনটি একসময় জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছিল। -রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্র গত জুলাইয়ে এইচটিএসকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেয়। বিবিসি জানায়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আনাস খাত্তাবের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্র এবং বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা সিরিয়া ও এর জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা সোমবার হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছেন। এর আগে ট্রাম্প সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ সফরের সময় শারার সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেছিলেন চলতি বছরের মে মাসে। সেই বৈঠকের পর ট্রাম্প শারাকে ‘দৃঢ়চেতা নেতা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। সেখানেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন শারা। সেই প্রতিশ্রুতি মেনেই জুলাইয়ে মার্কিন অর্থ দপ্তর জানিয়েছে, সিরিয়ার উন্নয়ন, সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা ও দেশের সামাজিক কাঠামো পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হচ্ছে। এবার জাতিসংঘও একই পথেই হাঁটল। একসময় নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ২০১৬ সাল পর্যন্ত সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী আল-কায়েদার সহযোগী ছিল। এরপর আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেন আহমেদ আল-শারা।