মহান আল্লাহ বান্দার হকের ব্যাপারে ভীষণ কঠোর। আল্লাহর হক তিনি দয়া করে মাফ করে দিলেও বান্দার হক বান্দার সঙ্গে সুরাহা করা ছাড়া মাফ হবে না বলে হাদিস শরিফে পাওয়া যায়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ঋণ ছাড়া শহীদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (মুসলমি : ৪৭৭৭)
ইমাম নববী (রহ.) বলেন, উল্লিখিত হাদিসে ‘ঋণ ছাড়া সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে’ বলার দ্বারা উম্মতকে সতর্ক করা হয়েছে ।
মহান আল্লাহ বান্দার হক মাফ করবেন না। জিহাদ, শাহাদাত ও অন্য নেক আমলের দ্বারা আল্লাহর হক মাফ হয়ে যায়। কিন্তু বান্দার হক তার কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া মাফ হয় না।
(শরহু সহিহিল মুসলিম : ৫/২৮)
তাই মুমিনের উচিত বান্দার হকের ব্যাপারে সতর্ক থাকা।
সুযোগ পেলেও কারো ক্ষতি করার চেষ্টা না করা। কারো সম্পদ লুটপাট করা থেকে বিরত থাকা। অন্য কেউ লুটপাট করলে তাকে তা থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করা। কারণ কোনো মুমিন অন্যায়ভাবে অন্যের সম্পদ লুটপাটে সমর্থন করতে পারে না।
আদি ইবনে সাবিত (রহ.)-এর নানা আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযিদ আনসারি (রা.) বলেন, নবী (সা.) লুটতরাজ করতে এবং জীবকে বিকলাঙ্গ করতে নিষেধ করেছেন। (বুখারি, হাদিস : ২৪৭৪)
কেননা এ ধরনের কাজ ঈমানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। হাদিস শরিফের ভাষ্যমতে, কোনো লুটপাটকারী ঈমান অবস্থায় লুট করতে পারে না। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যভিচারী মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোনো মদ্যপায়ী মুমিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোনো চোর মুমিন অবস্থায় চুরি করে না।
কোনো লুটতরাজকারী মুমিন অবস্থায় এরূপ লুটতরাজ করে না যে যখন সে লুটতরাজ করে তখন তার প্রতি লোকজন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে।’ (বুখারি : ২৪৭৫)
এ জন্যই হয়তো নবীজি (সা.) মুমিন বান্দাদের থেকে লুটপাট না করার ব্যাপারে বাইআত গ্রহণ করেছিলেন। উবাদাহ ইবনে সামিত (রা.) বলেন, আমি ওই মনোনীত প্রতিনিধিদলে ছিলাম, যারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বাইআত গ্রহণ করেছিল। তিনি আরো বলেন, আমরা তাঁর কাছে বাইআত গ্রহণ করেছিলাম জান্নাত লাভের জন্য, যদি আমরা এই কাজগুলো করি এই শর্তে যে—‘আমরা আল্লাহর সঙ্গে কোনো কিছুকেই শরিক করব না, ব্যভিচার করব না, চুরি করব না। আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন, তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করব না, লুটতরাজ করব না এবং নাফরমানি করব না। আর যদি আমরা এর মধ্যে কোনোটিতে লিপ্ত হই, তাহলে এর ফায়সালা আল্লাহ তাআলার ওপর।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৮৯৩)
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন