বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
র‌্যাব সদস্যের জবানবন্দি

ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে সহায়তা

নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের ঘটনায় ল্যান্স নায়েক বিল্লাল হোসেন দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল সকাল ৯টায় তাকে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এম শফিকুল ইসলামের আদালতে হাজির করে ২ ঘণ্টা তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এর আগে গত শনিবার র‌্যাব-১১ এর হাবিলদার এমদাদুল হক, ল্যান্স নায়েক হীরা মিয়া, লে. নায়েক করপোরাল আবু তৈয়ব ও রবিবার এবি করপোরাল আরিফ হোসেন আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গত বুধবার দিবাগত রাতে র‌্যাবের দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি মতে জবানবন্দি দেওয়া এই ৫ সদস্যকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খাঁন জানান, আদালতে বিল্লাল হোসেন জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দিতে সাতজনকে অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের পুরো বিষয় উঠে এসেছে।
সূত্র জানায়, আগের চারজনের দেওয়া জবানবন্দির সঙ্গে গতকাল দেওয়া বিল্লালের জবানবন্দির ৯৫ ভাগ মিল রয়েছে। বিল্লাল জবানবন্দি দেওয়ার আগে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের কাছে সাত খুনের পর ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয়ের বর্ণনা দিয়ে বলেছেন, সাত খুনের পর কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া অনেক সদস্য নীরবে নিভৃতে কেঁদেছেন। সাতজনকে অপহরণের পর খুনের বিষয়টি নিয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেওয়ারা অমানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছেন।
সূত্রটি আরও জানায়, অপহরণের পর সাতজনকে হত্যার বিষয়ে দৃঢ় ছিল র‌্যাব-১১ এর সাবেক সিও তারেক মোহাম্মদ সাঈদ, মেজর আরিফ ও এম এম রানা। কিন্তু কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া বাকিরা ছিল অসহায়। সাতজনকে অপহরণের পর হত্যার প্রসঙ্গ উঠলে নিছূ পদস্থদের কেউ কেউ বেঁকে বসেন। ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও সাত খুনে সহায়তা করতে বাধ্য হয়েছে তারা। নারায়ণগঞ্জ ডিবির ওসি মামুনুর রশীদ মণ্ডল জানান, সাত খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত দুটি মামলায় বিল্লাল জবানবন্দি দিয়েছেন। প্র্রসঙ্গত, সাত খুনের ঘটনায় কয়েক দফা রিমান্ডে নেওয়ার পর ৪ জুন মেজর আরিফ হোসেন, ৫ জুন কোম্পানি কমান্ডার এম এম রানা ও ১৯ জুন র‌্যাব-১১ এর সিও লে. কর্নেল তারেক মোহাম্মদ সাঈদ পর্যায়ক্রমে সাত খুনের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। উল্লেখ্য, ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন অপহর্ত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে সাতটি লাশ ভেসে ওঠে।

সর্বশেষ খবর