শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময়

সমুদ্র অর্থনীতিকেন্দ্রিক সুস্পষ্ট পরিকল্পনা চান বিশিষ্টজনরা

সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সমুদ্র অর্থনীতি নিয়ে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দেখতে চান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদরা। একই সঙ্গে কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ, রপ্তানি, রেমিট্যান্স, অবকাঠামো, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রমকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় প্রাধান্য দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় আয়োজিত সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন উপলক্ষে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে গতকাল মতবিনিময় সভায় এসব বলেন বক্তারা।
বক্তারা বলেন, সমুদ্রসম্পদ নিয়ে কী পরিকল্পনা থাকবে এর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকতে হবে।    গরিব মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখা দরকার। এ ছাড়া প্রশাসনিক ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ, যেসব খাতে কর্মসংস্থান বেশি হয় সেগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানো ও শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং কারিগরি শিক্ষা বাড়ানোর পরিকল্পনা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় রাখার পরামর্শ দেন তারা। পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জিইসি সদস্য ড. শামসুল আলম। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সমাজের সর্বস্তরের প্রতিনিধিদের মতামত প্রতিফলিত হবে। এ জন্যই মতবিনিময় সভা। সবার সুনির্দিষ্ট মতামতের ভিত্তিতেই এবারের সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরি করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার চতুর্থ বছর চলছে। ইতিমধ্যে ২০১৬-২০ মেয়াদের জন্য সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করা, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া, সব শিশুকে স্কুলে পাঠানো ও দেশকে একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে রূপান্তর করা হবে। পরবর্তী লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা এবং একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলে এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪০ সাল নাগাদ দেশকে পৃথিবীর যে কোনো উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী। অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, রেমিটেন্স বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত নার্স তৈরি করে বিদেশে পাঠানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক নার্স ইউরোপসহ উন্নত দেশগুলোতে পাঠানো হলে দেশ বছরে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মতো আয় করতে পারবে। এ ছাড়া বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে মানসম্মত কর্মসংস্থানে নিয়োজিত করতে পারলে উৎপাদন বাড়বে, যা জিডিপিকে বাড়াবে। এ জন্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘শুধু সুশাসন থাকলে বর্তমান বরাদ্দের মাধ্যমেই আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি শতকরা ৮ ভাগ হতো। বাংলাদেশ ভৌগোলিক দিক থেকে যেহেতু ভারত, চীন ও জাপান এই তিন বড় অর্থনীতির মধ্যে অবস্থিত, তাই সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে তা বাস্তবায়ন করা গেলে অর্থনৈতিকভাবে এর অনেক সুফল পাওয়া যাবে।’ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ-সাউথের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক গৌরগোবিন্দ গোস্বামী সমুদ্রসম্পদ নিয়ে স্পষ্ট রূপরেখা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় থাকতে হবে বলে মত দেন। বেসরকারি সংস্থা পিআরআইর নির্বাহী পরিচালক হোসেন মনসুর সেবা খাতকে রপ্তানিমুখী করার ওপর গুরুত্ব দেন। ব্যালেন্স অব পেমেন্ট নিয়ে স্পষ্ট রূপরেখা সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় থাকার ওপরও জোর দেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর