শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

হাত বাড়ালেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট পায় রোহিঙ্গারা

হাত বাড়ালেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট পায় রোহিঙ্গারা

রোহিঙ্গারা এমনিতেই এ দেশে অবৈধ। অথচ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে চাইলেই বাংলাদেশি হিসেবে পাসপোর্ট মেলে রোহিঙ্গাদের। বাংলাদেশিদের যেখানে পাসপোর্ট পেতে পোড়াতে হয় অনেক কাঠখড়, সেখানে রোহিঙ্গারা কিছু টাকা বেশি খরচ করলেই পেয়ে যান পাসপোর্ট। অভিযোগ রয়েছে, এ পাসপোর্ট দিয়েই তারা বিদেশে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন নানান ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে। আর তাতে সম্মানহানি হয় বাংলাদেশের। তবে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক ফজলুল হক। তার দাবি, ‘চট্টগ্রাম বিভাগের কোনো পাসপোর্ট অফিসে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেওয়া হয় না। এ ছাড়া কোনো আবেদনকারীকে পাসপোর্ট দেওয়ার আগে পুলিশি তদন্ত পর্যালোচনা করা হয়। পুলিশি তদন্তে কারও বিরুদ্ধে নেতিবাচক রিপোর্ট থাকলে তাকে পাসপোর্ট দেওয়া হয় না।’ অনুসন্ধানে জানা যায়, চট্টগ্রামে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দেওয়ার চক্রের সঙ্গে জড়িত পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) কিছু অসাধু সদস্য এবং ১০ দালালের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেই একজন রোহিঙ্গা পেয়ে যান বাংলাদেশি পাসপোর্ট। এ জন্য তাদের যেতে হয় পাসপোর্ট অফিস-ডিএসবি-দালালদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের কাছে। অনুসন্ধানে আরও দেখা গেছে, এই সিন্ডিকেটে রয়েছে দালাল চক্রের সর্দার জহির, ভাগিনা ইলিয়াছ, সাতকানিয়ার পারভেজ, মনির হুজুর, জুয়েল, মেহেদী, লক্ষণ বাবু, ইলিয়াছ এবং কানু। রোহিঙ্গারা দালালদের পরামর্শে চট্টগ্রামে জেলার রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া এলাকার ঠিকানা ব্যবহার করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে। পরে সিন্ডিকেটের তৎপরতায় এক মাসের মধ্যেই রোহিঙ্গারা পেয়ে যান বাংলাদেশি পাসপোর্ট। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাঈমুল হাছান দাবি করেন, ‘পাসপোর্ট তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখায় আবেদনগুলো যথাযথভাবে তদন্ত করা হয়। কোনো দালাল বা রোহিঙ্গার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পক্ষে রিপোর্ট দেওয়া হয় না।’ চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের সামনে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা হয় এক দালালের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘একজন রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট পেতে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এই টাকার মধ্যে পুলিশ তদন্ত রিপোর্টের জন্য পাঁচ থেকে সাত হাজার, পাসপোর্ট অফিসকে পাঁচ থেকে আট হাজার, চেয়ারম্যান সনদের জন্য দুই হাজার টাকা দিতে হয়। বাকি টাকা দালাল পেয়ে থাকেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর