একটি খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার চরচাপড়া গ্রামে প্রতিপক্ষের বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চলছেই। গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হলেও তাদের সামনেই চলছে এই তাণ্ডব। প্রাণ বাঁচাতে এসব বাড়ির মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গত রবিবার রাতে চরচাপড়া গ্রামে খুন হন আয়নাল শেখ নামে এক ব্যক্তি। এর পর থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিপক্ষের বাড়িতে লুটপাট আর ভাঙচুর। গতকাল দুপুরে চরচাপড়া গ্রামের প্রবেশ মুখে চোখে পড়ে কয়েকজন নারী, ছেলেমেয়ে আর কাপড়-চোপড়ের পোটলা নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এর মধ্যে একজন হলেন মিন্টু আলীর স্ত্রী হীরা বেগম। তিনি জানালেন, রবিবার রাতে খুনের ঘটনার পর পরই তার বাড়িতে হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন। সেই রাতে তিনি পাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে কোনো মতে প্রাণ রক্ষা করেন। গ্রামের আরও ভেতরে ঢুকতেই বাড়ি ঘরের বীভৎস ছবি চোখে পড়ে। কোনো বাড়িরই জানালা-দরজা নেই, সব লুট হয়ে গেছে। কোনো কোনো ঘরের চাল খুলে নেওয়া হয়েছে। আবার কারও কারও বাড়ির টেলিভিশন, ফ্রিজ, আলমারি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, খুনের ঘটনার পর পরই গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হলেও তারা মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। পুলিশ গ্রামের এক পাশে থাকলে আরেক পাশে চলছে তাণ্ডব। ঘটনার শিকার মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম নেহেদের স্ত্রী শামসুন্নাহার জানান, রবিবার রাতে ২০/২৫ জন লোক তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের মূল্যবান সম্পদ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ১০ ভরি সোনার গহনা এবং স্বামীর চিকিৎসার জন্য জমি বন্ধক দিয়ে নিয়ে আসা ৮০ হাজার টাকাও লুট করে। এদিকে আয়নাল নিহত হওয়ার ঘটনায় তার বড় ভাই আবদুল আজিজ কুমারখালী থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ এখন কোনো আসামি ধরতে পারেনি। জানা গেছে, চরচাপড়া গ্রামে এই লুটপাট তাণ্ডবের ঘটনা নতুন নয়। এর আগে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি খুন হন সাহেব আলী নামের একজন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে সে সময় আয়নাল শেখের বাড়িসহ (রবিবার রাতে নিহত) বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর লুটপাট চালানো হয়। কুমারখালী থানার ওসি খালেকুজ্জমান জানান, চরচাপড়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। সেখানে কোনো লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে না বলেও দাবি করেন তিনি।