রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা
এআইআইবিতে বাংলাদেশ

অবকাঠামো খাতে ঘাটতি পূরণের আশা

চীনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকে (এআইআইবি) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়েছে বাংলাদেশ। আর এ যোগদানের মধ্য দিয়ে এবার অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ ঘাটতি পূরণ হবে বলে আশা করছে সরকার। অর্থায়নের অভাবে দেশের গুরুত্বপূর্ণ যেসব প্রকল্প পরিকল্পনার পরও বাস্তবায়ন হচ্ছে না, মূলত নতুন এই ব্যাংক থেকে সেসব প্রকল্পে অর্থসহায়তা আনার ব্যাপারে জোর দেওয়া হবে বলে সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘মূলত এশিয়ার দেশগুলোর অবকাঠামো ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যেই ব্যাংকটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের যেসব খাতে ঘাটতি রয়েছে সেসব খাতে গুরুত্ব দিতেই প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’ জানা গেছে, বাংলাদেশের অবকাঠামো ও টেকসই উন্নয়নে প্রতি বছর ৫০০ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণসহায়তা প্রয়োজন। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি, আইডিবির মতো দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে বর্তমানে গড়ে পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি ডলার। বাকি অর্থ পেতেই নতুন ব্যাংকটিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন এ ব্যাংকটি কেবল গঠিত হলো। এর কার্যক্রম শুরুর পর প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে আমাদের পক্ষ থেকেও কী ধরনের সহায়তা নেওয়া হবে সে ব্যাপারে একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের বেশকিছু অগ্রাধিকার খাত রয়েছে। বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে বেশকিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণেও সরকারের চিন্তাভাবনা আছে। এসব প্রকল্পে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে আসবে বলে আশা করছি।’
এ ব্যাপারে অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে আমাদের অবকাঠামো খাতে প্রচুর বিনিয়োগ দরকার, তাই নতুন ব্যাংকটিতে যোগ দেওয়ার বিষয়টিও দেশের জন্য একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।’ সচিব আরও বলেন, এআইআইবিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক, ইআরডি, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের মতামত নেওয়া হয়েছে। তারা সবাই প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার বেইজিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের প্রস্তাবিত এআইআইবি ব্যাংকের কার্যক্রম ঘোষণা করা হয়। এর আগে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ বিশ্বের মোট ২১টি দেশ চীনের নেতৃত্বাধীন নতুন এ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে চুক্তিতে সই করে। প্রস্তাবিত ৫০০ কোটি ডলার মূলধনের এ ব্যাংককে মূলত বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের বিকল্প হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে। ব্যাংকটির মূল উদ্দেশ্য হবে সদস্য দেশগুলোকে অবকাঠামো খাতে ঋণ দেওয়া।

সর্বশেষ খবর