রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

ক্যাপসিকাম চাষে সফল বেলাল

ক্যাপসিকাম চাষে সফল বেলাল

একের পর এক আধুনিক পদ্ধতি ও নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেয়েছেন বেলাল আহমদ ইমরান। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বাসিন্দা উদ্যমী এই যুবক ইতিমধ্যে সিলেট বিভাগের কৃষকের মাঝে মডেল হিসেবে নিজের স্থান করে নিয়েছেন। সিলেট বিভাগে তিনিই প্রথম দেশীয় শিং মাছের রেণু পোনা উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেন। এর স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষিপদক-২০১৩’ লাভ করেন। কাজের স্বীকৃতি বেলালের স্বপ্ন আরও প্রসারিত করে। এখন মাছ চাষের মৌসুম নয় তবুও থেমে নেই তিনি। শুরু করেন সবজি চাষ। স্থানীয়ভাবে অল্পপরিচিত ভিন্নধর্মী সবজি ক্যাপসিকাম গ্রামের মাঠে চাষ করে নিজের সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। সবজি চাষেও বিপ্লব ঘটিয়েছেন তিনি। সরেজমিন বেলালের গ্রামের বাড়ি রামধানায় গিয়ে দেখা য়ায়, আগামী মৌসুমে মাছ চাষের জন্য পুকুর তৈরির পাশাপাশি পুকুরপাড় ও পাশের পরিত্যক্ত ফসলি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেছেন ক্যাপসিকাম, নাগা মরিচ (স্টারচিলি) ও সূর্যমুখী। এ ছাড়াও তার বাড়ির আঙিনায় পারিবারিক সবজিবাগানে রয়েছে ব্রকলি (নীল ফুলকপি), লেটুসপাতা, চেরি টমেটো, বান্ডা মরিচ, ধনিয়াপাতা, পেন মরিচ, শিম, লালশাক, ফুলকপি, বাঁধাকাপি, ঢেঁড়স, ক্যালিপনিয়া ওন্ডার ক্যাপসিকাম।
বেলালের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন মাছের রেণু পোনা উৎপানের মৌসুম না হওয়ায় গ্রামে ভিন্নধর্মী সবজি চাষে মনোযোগী হন তিনি। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. শহীদুল ইসলামের কাছ থেকে ক্যাপসিকামের বীজ সংগ্রহ ও চাষ পদ্ধতি শিখে মাঠে নামেন তিনি। গত বছরের নভেম্বরের শেষের দিকে মাত্র ২৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে জৈব পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করেন। কঠোর পরিশ্রম ও সঠিক নিয়মে পরিচর্যার ফলে অল্প দিনেই ফলন শুরু হয়। চার মাসের মাথায় ৪ হাজার ৭০০ গাছে এ পর্যন্ত ফলন হয়েছে ১ হাজার ৯০০ কেজি, যার বাজারমূল্য ২ লাখ ৯ হাজার টাকা। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে তার এ বাগান থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকার ফলন আসবে বলে তিনি আশাবাদী। বেলাল বলেন, ‘কৃষি নিয়েই আমার স্বপ্ন। ঘুম থেকে উঠে সব জমিতে আমি ফলন দেখতে চাই। আমার বাগান পরিদর্শন করে উৎসাহিত হয়ে অনেকেই আমার পথ অবলম্বন করেছেন। সবাইর অংশগ্রহণে কৃষি ক্ষেত্রে দেশ আরও সমৃদ্ধিশালী হবে এটাই প্রত্যাশা।’ এ বিষয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাপসিকাম একটি উচ্চমানের সবজি। এর পুষ্টিগুণ অনেক।
কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে সিলেট বিভাগে উচ্চমানের সব সবজি ছড়িয়ে দিতে আমাদের কাজ চলছে। বেলাল ইতিমধ্যে ক্যাপসিকাম চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন।’

সর্বশেষ খবর