শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা
পজেটিভ বাংলাদেশ

কুটিরশিল্পের গ্রাম রাজাপুর

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ (সিলেট)

কুটিরশিল্পের গ্রাম রাজাপুর

কেউ কাটছেন বাঁশ। কেউবা তুলছেন ফালি। পরিবারের অন্যরা দল বেঁধে তৈরি করছেন কুটিরশিল্প সামগ্রী। গ্রামের উঠানে উঠানে চলছে বাঁশ ও বেতের কাজের কর্মযজ্ঞ। এটি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের চিত্র।

বাঁশ ও বেত দিয়ে কুটিরশিল্প সামগ্রী তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন এ গ্রামের মানুষ। বংশপরম্পরায় এ পেশায় জড়িয়ে আছেন তারা। ধরে রেখেছেন প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বাঁশ ও বেতশিল্প। সারা দিন উৎসবের আমেজে নারী-পুরুষ তাদের নিপুণ হাতে তৈরি করেন কুলা, চাটাই, হাঁস-মুরগির খাঁচা, চালুনি, ঢাকনা, টুকরি, চাঙ্গা, মাছ ধরা ও রাখার সরঞ্জাম। সম্প্রতি সরেজমিন রাজাপুরে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে উঠানে চলছে কুটিরশিল্প তৈরির কাজ। বসে নেই নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা এমনকি শিশুরাও। সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্কুলপড়ুয়া শিশুরাও এ কাজে ব্যস্ত সময় কাটায়। সপ্তাহব্যাপী শিল্পসামগ্রী তৈরির পর ঘরে বসেই পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে সেগুলো বিক্রি করা হয়। সপ্তাহে একবার পাইকারি বিক্রেতারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাল কিনে নেয়। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে সিলেটের বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হয় রাজাপুরের কুটিরশিল্প সামগ্রী। গ্রামের প্রবীণ মোহাম্মদ সবর উল্লাহ (৬৫) জানান, ছোটবেলা পিতার কাছ থেকেই এ কাজে হাতেখড়ি। এটিই তাদের জীবিকা উপার্জনের অন্যতম পেশা। পূর্বপুরুষরাও এ কাজ করতেন। তখন এটি লাভজনক ছিল। বর্তমানে প্লাস্টিক সামগ্রীর কারণে আগের মতো কুটিরশিল্পের বাজার নেই। তা ছাড়া বাঁশ ও বেতের দামও দ্বিগুণ হয়েছে। সিলেটের কানাইঘাট ও জৈনতা এলাকা থেকে বাঁশ সংগ্রহ করা হয়। কুটিরশিল্পে খরচ বৃদ্ধির তুলনায় জিনিসের মূল্য সে অনুপাতে পাওয়া যায় না। জীবিকার তাগিদে পাশাপাশি অন্য কাজও করতে হয়। তারপরও পারিবারিক পেশা হিসেবে কুটিরশিল্পকে আঁকড়ে ধরে রাখা হয়েছে। তার মতে, সরকারি সহায়তা পেলে প্রয়োজনীয় এ শিল্পের প্রসার ঘটানো সম্ভব। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুল হক বলেন, কুটিরশিল্প প্রসারে সরকারি সহযোগিতা অব্যাহত আছে। পর্যায়ক্রমে সবার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। চাইলে কৃষি ব্যাংক থেকে তারা ঋণও নিতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর