বুধবার, ১৫ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

হালিম দইবড়ার সঙ্গে এবার হাঁড়িভাঙা আম

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

হালিম দইবড়ার সঙ্গে এবার হাঁড়িভাঙা আম

প্রতিবছর রোজায় বুট, বুন্দিয়া, বেগুনি দিয়ে ইফতারি করি। এবার আমের মৌসুমে রোজা, দামও কম। তাই প্রতিদিন হাঁড়িভাঙা আম দিয়েই ইফতার করে তৃপ্তি পাচ্ছি’—এমন অভিমত ব্যক্ত করলেন নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ের পান দোকানি সামসুল আলম চিনু। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বললেন, এবার ইফতারির তালিকা থেকে ভাজা-পোড়া খাবার বাদ দিয়ে রংপুরের ঐতিহ্য হাঁড়িভাঙা আম রেখেছি। আম দিয়ে ইফতারির পর বেশ তরতাজা মনে হয়।

রংপুরে হোটেল-রেস্তোরাঁ ও কনফেকশনারিগুলোতে জিলাপি, বাখরখানি, মাংসের রেজালা, মাসকেট হালুয়া, জালি কাবাব, রাসমতি, টিকা কাবাব, কলিজির চপ, রাজভোগ, ফালুদা, ডিমের চপ, চিকেন ফ্রাই, পাটিসাপটা পিঠা তৈরি করলেও এবার ইফতারিতে এসবের খুব একটা কদর নেই। ইফতারিতে বুট, বুন্দিয়া, বেগুনি আর পিয়াজুর আমেজ পুরনো হয়ে গেছে। এ বছর ইফতারিতে হাড়িভাঙা আমের কদর সবচেয়ে বেশি। এরপরই রয়েছে বৈশাখীর হালিম ও দইবড়ার কদর। নগরীর বিভিন্ন ইফতারি দোকান ঘুরে এবং রোজাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাজা-পোড়ার চেয়ে আম বা ফলমূল দিয়ে ইফতারি করা ভালো। নগরীর মেডিকেল মোড়ে বৈশাখী হোটেল ও রেস্তোরাঁয় তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী দইবড়া এবং হালিম। রোজার মাসে কেবল এসব খাবার তৈরি করা হয়। টক দইয়ের মধ্যে মাসকলাইয়ের ডালের বড়া দেওয়া হয়। এভাবে তৈরি হয় দইবড়া। ছোট ছোট প্লাস্টিকের বাটিতে প্রতিটি দইবড়া বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে। আর হালিম বিক্রি হচ্ছে ৬০, ১২০, ১৫০ ও ২৫০ টাকা বাটি। গতকাল বিকালে মুন্সিপাড়া থেকে ক্রীড়াবিদ নুর শাহিন ইসলাম লাল বৈশাখীর হালিম ও দইবড়া কিনতে আসেন। তিনি জানালেন, প্রতিদিন ইফতারিতে বৈশাখীর হালিম ও দইবড়া চাই। স্বাদ মুখে লেগে থাকে বলে প্রতিদিন ছুটে আসি হালিম ও দইবড়া কিনতে। হালিম ও দইবড়া ছাড়া ইফতারে পূর্ণতা আসে না।

বৈশাখী হোটেলের স্বত্বাধিকারী ফজলুল হক বলেন, চাহিদা অনুযায়ী দইবড়া ক্রেতাদের সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। কারণ তৈরি করতে বেশ সময় লাগে। দুপুরের পর থেকে হালিম বিক্রিতে উপচে পড়া ভিড় জমে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় হালিমের দাম বাড়ানো হয়েছে। কাচারি বাজারে মহুয়া কনফেকশনারি ও মৌবন কনফেকশনারি বুট, বুন্দিয়া, বেগুনি ও পিয়াজুর পাশাপাশি নতুন করে বিক্রি করছে মাংসের রেজালা, মাসকেট হালুয়া, জালি কাবাব, রাসমতি, টিকা কাবাব, কলিজির চপ। মহুয়া কনফেকশনারির স্বত্বাধিকারী মুন্না মিয়া বলেন, ইফতারিতে আলাদা স্বাদ আনতে নতুন নতুন খাবার তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়া নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ের স্বাদ কনফেকশনারি, নিউ স্বাদ কনফেকশনারি, মিঠু হোটেল, সেন্ট্রাল রোডের খালেক হোটেল, দেশ রেস্টুরেন্ট, সাতমাথার বিসমিল্লাহ হোটেল ও রেস্তোরাঁ, ভাই ভাই হোটেল, লালবাগের নূরানী হোটেল ও রেস্তোরাঁ ইফতারিতে নতুন ইফতারি সামগ্রী সংযোজন করেছে। জেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান জানান, ইফতারির দোকানগুলোতে ভেজালবিরোধী অভিযান শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত বাসি ও ভেজাল মেশানো খাদ্য পাওয়া যায়নি। বিক্রি হচ্ছে ফরমালিনমুক্ত আম।

সর্বশেষ খবর