বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ফ্যাশনে পাঞ্জাবির জয়জয়কার

মোস্তফা মতিহার

ফ্যাশনে পাঞ্জাবির জয়জয়কার

পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদের আনন্দ যেন পূর্ণতা পায় না। সব ধরনের পোশাক কেনার পরও যদি পাঞ্জাবি কেনা না হয়, তাহলে মনে হয় যেন কিছুই কেনা হয়নি। যে কারণে ঈদের সব কেনাকাটার পর পাঞ্জাবি কেনার জন্য তরুণরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন পাঞ্জাবির দোকানগুলোয়। আর এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাচ্ছে ফ্যাশনেবল পাঞ্জাবি। মার্কেটগুলোয় তাই জয়জয়কার এ পাঞ্জাবির। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, ফ্যাশনপ্রিয় তরুণদের ফ্যাশনের কথা চিন্তা করে এবারের ঈদে গুণগতমানের কাপড় ও ডিজাইনের ক্ষেত্রে আনা হয়েছে বৈচিত্র্যময় পরিবর্তন। কাতান, সফট কাতান, সিল্ক, রাজশাহী সিল্ক, অ্যান্ডি সিল্ক, মসলিন সিল্ক, ইন্ডিয়ান কুশাল, রাজশাহী মটকা, কাবলি, অ্যামবুশ, প্রিন্ট, বোম্বে প্রিন্ট, রাজশাহী প্রিন্ট, মাইরোভা, কারচুপি, ইন্ডিয়ান কারচুপি, সুতি, ইন্ডিয়ান সুতি, কটি, মোদি কটি, শেরওয়ানি, প্রিন্স কোট, হোয়াইট কটন, জুট কটন, বাবু কটন, মানিক কটন, ইন্ডিয়ান সুলতান, ধুতি পাঞ্জাবি, কম্পিউটার কাজের পাঞ্জাবি, ইন্ডিয়ান কাবলি পাঞ্জাবি, ধুপিয়ান কটনের ওপর কারচুপির কাজ করা পাঞ্জাবি, দেশীয় কটনের অ্যামবুশ পাঞ্জাবি, স্টেপ কাপড়ের অ্যামব্রয়ডারি উইথ কারচুপির পাঞ্জাবি, জ্যাকেট কাপড়ের ওপর স্টোনের কাজের পাঞ্জাবি— ইত্যাদি আকর্ষণীয় ও লোভনীয় কালেকশন রয়েছে এবারের আয়োজনে। ইন্ডিয়ান পাঞ্জাবির পাশাপাশি দেশীয় কাপড়ের আকর্ষণীয় পাঞ্জাবিও এবারের ঈদে ফ্যাশন অনুরাগীদের মন কেড়েছে। আর পাঞ্জাবির এসব কালেকশন নিয়ে এসেছে রাজধানীর বৃহৎ পাঞ্জাবির মার্কেট বলে খ্যাত মালিবাগের আয়শা শপিং কমপ্লেক্স। রাজধানীর অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় এ মার্কেটটি পাঞ্জাবির জন্য প্রসিদ্ধ বলে এখানেই দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন পাঞ্জাবিপ্রিয়রা। এ মার্কেটটির বিন্দু, তাসিন’স, মাহিন’স, পল্লব, সোনিয়া, নাহিদ ফ্যাশন, সাদিয়া ক্রাফট, পাঞ্জাবিওয়ালা, আবরু, মাতৃভূমিসহ বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে সব ধরনের ফ্যাশনেবল পাঞ্জাবি।

এর মধ্যে আবার কোনো কোনো দোকানে রয়েছে শুধু দেশীয় কাপড়ের দেশীয় ফ্যাশনের পাঞ্জাবি। আবার অনেক দোকানে রয়েছে ইন্ডিয়ান কাপড়ের ইন্ডিয়ান ফ্যাশনের মনকাড়া ডিজাইনের সব পাঞ্জাবি।

বাংলার ঐতিহ্য হিসেবে পরিচয়দানকারী পাঞ্জাবির দোকান ‘বিন্দু’র বিক্রয়কর্মী হাজী সুইট মাল জানান, ফ্যাশনেবল তরুণদের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে দেশীয় ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিয়েই তাদের কালেকশনে সব দেশীয় পাঞ্জাবি রাখা হয়েছে। দামও ক্রেতার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে। এ দোকানটিতে কাতান কাপড়ের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ১৮০০, ২০০০, ৩০০০ ও ৪০০০ টাকায়। রাজশাহী সিল্ক পাওয়া যাচ্ছে ৫০০০ থেকে ৮০০০ টাকায়, সুতি পাঞ্জাবি ৭০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। নাহিদ ফ্যাশনে বাচ্চাদের কাবলি পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়, নরমাল পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। বড়দের সাধারণ পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ৪০০০ টাকায়। এই দোকানের বিক্রয়কর্মী নাঈমুল আলম খান জানান, অতিমাত্রায় গরমের কারণে এবারের ঈদে পাঞ্জাবির রং নির্বাচনে ক্রেতারা হালকা রংকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। মার্কেটটির অন্য দোকান সোনিয়ায় পাওয়া যাচ্ছে সুতি সেমি লং, অ্যামবুশ, সফট কাতান, ইন্ডিয়ান কাতান, ইন্ডিয়ান কটন, রাজশাহী সিল্ক ও অ্যান্ডি সিল্কের পাঞ্জাবি। ঈদের ফ্যাশনে সাদিয়া ক্রাফটও নিয়ে এসেছে হরেকরকমের ডিজাইনের পাঞ্জাবি। এই দোকানের ফয়জুর রহমান মিরাজ জানান, হোয়াইট কটন তারা বিক্রি করছেন ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। জুট কটন পাওয়া যাচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৮০০ টাকায়, ইন্ডিয়ান ওপেন সেটের দাম রাখা হচ্ছে ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকার মধ্যে, সুতি কাপড়ের দেশি প্রিন্টের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, অ্যান্ডি সিল্ক পাওয়া যাচ্ছে ২২০০ থেকে ২৮০০ টাকায়, মসলিন সিল্কের পাঞ্জাবি ৩০০০ থেকে ৪২০০ টাকার মধ্যে।

আয়শা শপিং কমপ্লেক্সের পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী পাঞ্জাবির দোকান হিসেবে খ্যাত তাসিন’স-এ ইন্ডিয়ান কুশাল পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। ইন্ডিয়ান সুলতান পাওয়া যাচ্ছে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে, ধুতি পাঞ্জাবি ও কারচুপির কাজের পাঞ্জাবির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০০ থেকে ৩০০০, কম্পিউটার পাঞ্জাবি ১২০০ থেকে ১৮০০ ও ইন্ডিয়ান কাতান পাওয়া যাচ্ছে ১৮০০, ২০০০, ২২০০ ও ২৫০০ টাকার মধ্যে। তবে এ দোকানটির বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ হৃদয় খন্দকার জানান, তাদের দোকানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ইন্ডিয়ান সুলতান পাঞ্জাবি।

সর্বশেষ খবর