বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

খামারে ভাগ্য বদল

নওগাঁ প্রতিনিধি

খামারে ভাগ্য বদল

বিয়ের পর বাবার বাড়ি থেকে নাজমা দুটি মুরগি নিয়ে আসেন অভাবী সংসারে। মুরগিগুলোকে লালন পালন করতে থাকেন। মুরগি ডিম দেয়। সে ডিম নিজেরা না খেয়ে বিক্রি করে কিছু টাকা জমানো শুরু করেন।

স্বামী আবদুল কুদ্দুস রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। সেও কিছু টাকা দেয়। এভাবে ৮০০ টাকায় একটি ছাগল কিনে আবারও যত্নের সঙ্গে পালন করা শুরু করেন নাজমা। ছাগল বড় হয়ে বাচ্চা দেয়। একটা থেকে দুইটা, এভাবে বাড়তে থাকে। এক সময় সংসারে আসে প্রথম ছেলে সন্তান। নাজমা তখন স্বপ্ন দেখেন, একদিন ছাগল থেকে গরু কিনে খামার করবেন, বড়লোক হবেন। এসব কথা যখন বলছিলেন তখন দুচোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল গৃহবধূ নাজমা বেগমের (৩৫)। আর ডানে ও বামে দুই ছেলে জাপটে ধরেছিল। নাজমা বলছিলেন, ‘আমি স্বপ্ন দেখতাম, বিশ্বাস করতাম-একদিন আমাদের সংসারে অভাব থাকবে না। আজ সে স্বপ্ন ও বিশ্বাস হাতের মুটে এসে ধরা দিয়েছে।’ নওগাঁ সদর উপজেলার লখাইজানি গ্রামের নাজমা ও আবদুল কুদ্দুস আজ গরুর খামার করে স্বপ্ন পূরণ করেছেন। নাজমার খামারে এখন ৩৫টি গরু। এর দেখভাল করার জন্য রয়েছে দুইজন মাসিক বেতনের লোক। প্রতিটি গরু গড়ে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা দাম হবে। ২০০৪ সালের যাত্রা করা নাজমার এখন রয়েছে ১৬ কাঠা জমির উপর বাড়ি ও দুটি গরুর শেড। রয়েছে ধানী জমি দুই বিঘা। দিনে রাজমিস্ত্রি কাজ, আর রাতে এসে গরুর যত্ন- এভাবে স্বামী-স্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টার ফল এই খামার। নাজমা জানান, আসছে ঈদুল আজহার হাটে সব গরু বিক্রি হবে। এক সপ্তাহ আগে ১৮টি গরু বিক্রিও করেছেন তিনি। এসব গরু গড়ে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। গরু বিক্রির মুনাফা দিয়ে বসত সংলগ্ন আরও ১৪ কাঠা জমি কিনছেন নাজমা দম্পতি। আগামীতে আরও বড় আকারে খামার গড়ে তোলার স্বপ্ন কাজ করছে নাজমা দম্পতির মনে।

সর্বশেষ খবর