শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বীকারোক্তি আদায়ে নির্মম নির্যাতন যুবকের মৃত্যু

ফুলবাড়ী প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে কথিত সেচ পাম্প চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ের সময় নির্মম নির্যাতন করে শহিদুল ইসলাম (৩৭) নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত যুবক উপজেলার পূর্ব ফুলমতি গ্রামের এরশাদ আলী গেতুর ছেলে। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পুলিশ আজিজুল ইসলাম (৪০) নামের এক নির্যাতনকারীকে আটক করেছে। এদিকে           সন্তান হারিয়ে শোকার্ত মা ও স্বজনদের আহাজারিতে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বুধবার রাত ৮টায় ওই যুবককে (শহিদুল ইসলামকে) তুলে নিয়ে গিয়ে উপজেলার চর গোড়কমণ্ডলের ভুট্টা খেতে নির্যাতন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ওই এলাকার জর্জি মিয়ার খড়ের গাদায় অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সাড়ে ১০টায় ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওইদিন রাত ১টার দিকে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের মা সুফিয়া খাতুন জানান, গোরকমণ্ডলের নুর হোসেন (৩০), আজিজুল ইসলাম (৪০)সহ একদল মাদক চোরাকারবারি ওই এলাকার মাঝিপাড়া থেকে শহিদুলকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করেন। এ সময় শহিদুলের দুই হাঁটুর নিচে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কোপানো হয়। তিনি চিৎকার শুরু করলে লোহার কাটিং প্লাস দিয়ে ডান পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির নখ তুলে রগ কেটে দেওয়া হয়। গতকাল শহিদুলের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় বৃদ্ধা মা বিলাপ করছেন, ‘আমার ছেলেকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’ শহিদুলের ছেলে সুমন (১৩) হাউমাউ করে কেঁদে বলছে, ‘আমি এই পাষণ্ডদের ফাঁসি চাই।’ স্থানীয় এনামুল (৪০), আতাউর (৩০), আনোয়ার (৪২), বাবুল (৪৫) জানান, ‘এ হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত। যারা তাকে চোর বানানোর কথা বলে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন তারা তো চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে হত্যা করা যায় না। আমরা এর দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।’ নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুসাব্বের আলী বলেন, কী কারণে হত্যাকাণ্ড হয়েছে তা তিনি জানেন না। ফুলবাড়ী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) এফতেখারুল জানান, ‘শহিদুলের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’ ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ এ বি এম রেজাউল ইসলাম জানান, ‘হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত। কেউ কাউকে এভাবে নির্যাতন করে হত্যা করতে পারে না।’

সর্বশেষ খবর